Thursday 25 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে সংকট কাটাতে ফিরছেন তারেক রহমান

ফারহানা নীলা স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৯ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:০৭

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: স্বাধীনতা পরবর্তী ভঙ্গুর রাজনীতির কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছিলেন বলে তাকে বলা হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। কারণ, তিনি বহু মত ও পথকে একসঙ্গে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সেই স্বপ্নদ্রষ্টা রাষ্ট্রনায়ক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তার জীবনসঙ্গী আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুযোগ্য উত্তরাধিকার হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তবে এই পরিচয়ে বাইরে তারেক রহমান তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে পরিচিত। স্বকীয় ভাব ও ভঙ্গিমায় মানুষের বিশ্বাসের জায়গায় স্থান করে নিয়েছেন তিনি। উত্তরাধিকারের প্রশ্নে নয়, নিজ যোগ্যতা ও নেতৃত্বে এখন তিনি বিএনপির অদ্বিতীয় নেতা। দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে অবশেষে এক রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে দেশে ফিরছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বিশ্লেষকদের ধারণা, তার এই ফেরার মধ্য দিয়ে প্রাণ ফিরে পাবে বিএনপি, বিশেষ করে দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। আস্থায় ফিরবে রাজনীতি ও গণতন্ত্র। দেশের অস্থিরতা ক্রমেই দূর হয়ে যাবে। কারণ, তারেক রহমান তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত আস্থা ও সংকটে মানুষের জন্যই রাজনীতি করেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।

তৃণমূল রাজনীতির ভিত্তিকাল

২০০১ থেকে ২০০৬ সালকে তারেক রহমানের তৃণমূল রাজনীতির ভিত্তিকাল হিসেবে ধরা হয়। ওই সময়ে তিনি দেশের ৬৪টি জেলাকে ২০টি সেক্টরে ভাগ করে একের পর এক কনফারেন্স আয়োজন করেন। এসব কনফারেন্সে শুধু রাজনৈতিক নেতা নয়, কৃষক, জেলে, দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষের কথা সরাসরি শোনার ওপর জোর দেওয়া হয়। সমস্যার ধরণ অনুযায়ী প্রতিটি অঞ্চলের জন্য আলাদা সুপারিশমালা তৈরি করা হয়, যেগুলো পরে ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছে সরাসরি তুলে দেওয়া হয়।

তাছাড়া, তিনি উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের খাল–নদী–নালার মানচিত্র নিজ হাতে তৈরির উদ্যোগ নেন। নিয়মিত রোড মিটিং, স্থানীয় বৈঠক ও অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসবের মাধ্যমে তৃণমূল রাজনীতিকে তিনি নতুনভাবে সক্রিয় করেন। যদিও বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলোতে তার আনুষ্ঠানিক পদ না থাকলেও সাংগঠনিক কার্যক্রমে প্রভাব ছিল।

সংকটকাল ও দ্বিমুখী নেতৃত্ব

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. রমিত আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০০৬ সালের পর বিরাজনীতিকরণের প্রচেষ্টা এবং দলের ওপর বিরূপ চাপ বেগম খালেদা জিয়ার বন্দিত্ব, তারেক রহমানের গ্রেফতার, নির্যাতন ও বিদেশে চলে যাওয়া সবমিলিয়ে দলের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করে।’

তিনি বলেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থা ধরে রাখা এবং তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা ছিল তারেক রহমানের বড় সাফল্য। লাখ লাখ মামলা, হাজারো নেতাকর্মীর নির্যাতন এবং হত্যার পরও বিএনপিকে ভাঙা সম্ভব হয়নি তারেক রহমানের দ্বিমুখী সংযোগ কৌশলের কারণে।’

২০০১–২০০৬ সালের মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা, পিতার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার এবং বিদেশে অবস্থানকালীন পর্যবেক্ষণ- এসবের সমন্বয়ে তিনি দলকে সংগঠিত রাখতে সক্ষম হন।

প্রত্যাবর্তন ও ভবিষ্যতের প্রভাব

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের পর তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই প্রত্যাবর্তন বিএনপির তৃণমূল রাজনীতিতে নতুন গতি আনতে পারে। ভার্চুয়াল নেতৃত্বের দীর্ঘ অধ্যায়ের পর সরাসরি উপস্থিতি দলের ভেতরের সংযোগকে আরও দৃঢ় করবে, অভ্যন্তরীণ বিভেদ দূর হবে এবং নির্বাচনের রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

তারেকের প্রত্যাবর্তন নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘তারেক রহমানের আগমন শুধু একজন নেতার আগমন নয়, এটি বহু প্রতীক্ষিত নেতার আগমন। তার আগমন ঘিরে জনগণের প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা ও দীর্ঘ প্রতীক্ষা দেশের জন্য একটি নতুন দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।’

বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান কেবল একজন উত্তরাধিকারী নেতা নন, তিনি সংযোগকারী, সংগঠক ও তৃণমূল রাজনীতির অন্যতম একজন হিসেবেও পরিচিত। তার রাজনৈতিক কৌশল, তৃণমূলের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন সংযোগ এবং নেতৃত্বের সরাসরি উপস্থিতি বিএনপির ভবিষ্যতের জন্য বড় একটি শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

দেশের আকাশসীমায় তারেক রহমান
২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৪

শিরোপা জয়ের লক্ষ্য রাজশাহীর
২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:২৮

আরো

ফারহানা নীলা - আরো পড়ুন
সম্পর্কিত খবর