বরিশালে ৪৪%, রাজশাহীতে ৫৮%, সিলেটে ৩৩% নৌকার পক্ষে: জরিপ
২৯ জুলাই ২০১৮ ১২:৪৯
ডেস্ক রিপোর্ট
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, তার নিয়োজিত একটি টিমের পরিচালনায় জনমত জরিপ বলছে বরিশালে ৪৪ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫৮ শতাংশ ও সিলেটে ৩৩ শতাংশ মানুষ তিন সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থীদের পক্ষে রয়েছেন।
সে হিসাবে তিন সিটিতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা মেয়র হতে পারেন বলেই ধারনা করা হচ্ছে।
রোববার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টায় সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, আমার টিম বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে একটি জনমত জরিপ চালিয়েছে। গোটা জুলাই মাস ধরেই এই জরিপ চালিয়েছে রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) নামের প্রতিষ্ঠানটি।
জরিপ মতে-
বরিশালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে রয়েছে ৪৪ শতাংশ জনমত। ১৩.১ শতাংশ মানুষ রয়েছেন বিএনপি প্রার্থী মজিবুর রহমান সরোয়ারের পক্ষে। অন্যান্য প্রার্থীরা ০.৮ শতাংশ জনসমর্থন পাচ্ছেন। আর এই নগরীর জরিপের আওতায় আসা ২৩ শতাংশ মানুষ বলছেন, ভোটের ব্যাপারে তারা এখনো সিদ্ধান্ত নেন নি। আর ১৫.৯ শতাংশ মানুষ এই জরিপকারী দলের কাছে কোনও উত্তর দিতে চাননি। নগরীর মোট ১ হাজার ২৪১ জনের মধ্যে এই জরিপ চালানো হয়েছে।
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে ৫৮ শতাংশ ভোটার তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। এখানে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে ১৬.৪ শতাংশ ভোটার রয়েছেন। আর অন্য প্রার্থীরা সমর্থন পাচ্ছে ০.৯ শতাংশ ভোটারের। এছাড়া রাজশাহীতে ১২.৩ শতাংশ ভোটার এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেন নি। আর ৯.৬ শতাংশ ভোটার এই জরিপকারী দলের কাছে তাদের মতামত জানাতে রাজি হননি। এই নগরে ১ হাজার ২ শ’ ৯৪ জন সম্ভাব্য ভোটারকে এই জরিপের আওতায় আনা হয়।
সিলেটে বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান নৌকা প্রতীক নিয়ে জনমতের ৩৩ শতাংশ নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন, বিএনপি’র আরিফুল হক চৌধুরী ২৮.১ শতাংশ সমর্থন পাচ্ছেন বলেই এই জরিপকারী সংস্থাটি দেখতে পাচ্ছে। এর বাইরে অন্য প্রার্থীদের প্রতি সমর্থন রয়েছে ১.৩ শতাংশ ভোটারের। সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন ২৩.০ শতাংশ ভোটার আর জনমতে উত্তর দিতে চাননি ১২.৬ শতাংশ ভোটার। এই জরিপের আওতায় ছিল ১ হাজার ১ শ’ ৯৬ জন সম্ভাব্য ভোটার।
সজীব ওয়াজেদ জয় আরও জানান, সিটি কর্পোরেশনের ভোটার তালিকার নারী ও পুরুষ ভোটারের অনুপাত এবং বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট শহরের ২০১১ সালের শুমারির বয়স সম্পর্কিত তথ্যের বিন্যাস অনুযায়ী এই জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা থেকে ঠিকানা নিয়ে জরিপের জন্য নমুনা বাছাই করা হয়। এর মধ্য থেকে যারা নিজেদেরকে সিটি কর্পোরেশনের ভোটার বলে নিশ্চিত করেন তাদেরকেই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই জরিপে ভুলের মাত্রা (মার্জিন অব এরর) ধরা হয় +/-২.৫।
জয় বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে আরডিসি-এর মাধ্যমে আমরা জরিপ পরিচালনা করছি। তাদের জরিপের পদ্ধতি ও ফলাফল বরাবরই আমার সঠিক মনে হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যেহেতু জরিপগুলো গত এক মাস ধরে করা হয়েছে এবং এর মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা জোরেশোরে চলেছে তাই জরিপ ও নির্বাচনের ফলাফলে কিছুটা তফাৎ হতে পারে। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী যে বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ বিশাল ব্যবধানে জয়ের পথে। যদিও সিলেটে আমরা কিছুটা এগিয়ে আছি, এই মুহূর্তে আসলে কাউকেই বিজয়ী হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, বিএনপি অনেক ধরণের অভিযোগ করতে থাকে, কিন্তু আসল কথা হচ্ছে তাদের কোনো জনপ্রিয়তাই নেই। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন দিন দিন বাড়ছে।
নির্বাচনী লড়াইয়ে বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের জন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই না, বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমি আমাদের দলীয় নেতাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানাবো তারা যেন সজাগ থাকেন। কারণ আমাদের আশংকা বিএনপি ভোট কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়ে সেই দায় আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা চালাবেন। আপনারা সবাই বিএনপি নেতাদের এইরূপ ষড়যন্ত্রের ফোনালাপ সম্প্রতি শুনেছিলেন। বিএনপির প্রার্থীরা যতই ভোটারদের কাছে যান, ততই তারা বুঝতে পারেন তাদের দল বাংলাদেশের মানুষদের থেকে কতটা দূরে সরে গিয়েছেন। তাই আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের একমাত্র কৌশল।
সারবাংলা/এমএম