পাকিস্তানে ভারতের বিমান হামলা, নিহত ৮
৭ মে ২০২৫ ০৮:৫৬ | আপডেট: ৭ মে ২০২৫ ১৬:০০
কাশ্মীরের পর্যটকদের ওপর হামলার জবাবে বুধবার (৬ মে) পাকিস্তান ও পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে বিমান হামলা চালিয়েছে ভারত। এতে উপমহাদেশের দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যদিও ভারত এ দাবি অস্বীকার করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে হামলাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।
পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতের হামলায় তাদের ছয়টি স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়েছে, এতে আটজন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আরও দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। দেশটির সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘সব ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাকিস্তান দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হলেও দেশের মর্যাদা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সন্ত্রাসী হামলার জবাবে পাকিস্তানের নয়টি সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে, যেগুলোর সঙ্গে এপ্রিল মাসে কাশ্মীরে ২৬ হিন্দু পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে। ভারতীয় সূত্র জানিয়েছে, হামলাগুলোর মধ্যে ছিল জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তইয়বা নামের দুইটি সংগঠন।
ইসলামাবাদ ভারতের হামলাকে যুদ্ধ ঘোষণার স্পষ্ট উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছে, তারা ভারতের আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে।
হিমালয় অঞ্চলজুড়ে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি এবং মর্টার হামলার খবর দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। ১৯৪৭ সালের পর থেকে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তান দুইটি যুদ্ধ করেছে, এবং উভয়ই অঞ্চলটি নিজেদের সম্পূর্ণ দাবি করে, যদিও আংশিকভাবে দুই দেশই এটি নিয়ন্ত্রণ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিস্থিতিকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন এবং দ্রুত সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দুই দেশকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতের হামলার পর মুজাফফরাবাদে বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ বিস্ফোরণ, আগুন এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় দুটি মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ভারতের দাবি, কেবলমাত্র সন্ত্রাসী স্থাপনাগুলোই লক্ষ্যবস্তু ছিল।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি। পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং হাসপাতাল ও জরুরি সেবা সংস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
ভারতের সেনাবাহিনী সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করে জানিয়েছে, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
সারাবাংলা/এনজে