ঢামেকে অভিযান চালিয়ে ২১ অবৈধ হুইল চেয়ার জব্দ
৭ মে ২০২৫ ১৮:৩২ | আপডেট: ৭ মে ২০২৫ ২০:৩০
ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কতৃপক্ষ হঠাৎ করে অভিযান চালিয়ে ২১টির মতো অবৈধ হুইল চেয়ার জব্দ করেছে।
বছরের পর বছর জরুরি বিভাগ চত্বরসহ হাসপাতালের চতুর্দিক থেকে বহিরাগত নারী-পুরুষও অবৈধভাবে হুইলচেয়ারে রোগীদের বহনের নাম করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে আসছিল।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরের দিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. আশরাফুল আলম জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার আইয়ুব আলী ও সর্দার মোখলেছুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সরকারি লোকজনকে দিয়ে জরুরি বিভাগের আশপাশেসহ মোট ২১টি হুইলচেয়ার জব্দ করে। এ সময় হুইল চেয়ার বহনকারীরা দ্রুত হুইল চেয়ার রেখে পালিয়ে যায়। এছাড়া আশপাশে বিভিন্ন জায়গায় ছিকল দিয়ে তালামারা অবস্থায় ছিল।
উপ-পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একটি জাতীয় হাসপাতাল। ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে এখানে রোগীরা এসে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। অনেক লোকের সমাগম হয় এখানে। এই সুযোগে দালালরা চারিদিক থেকে সুযোগ খুঁজেন। আজকের জরুরি বিভাগ থেকে ২১টির মতো হুইল চেয়ার জব্দ করা হয়েছে, যার সবগুলোই অবৈধ। এই অভিযান চলমান থাকবে। কোনো দালালকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। হাসপাতালের যারা দালালদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জরুরি বিভাগে দেখা যায়, কর্তৃপক্ষসহ বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে নিয়ে জরুরি বিভাগ চত্বরে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় হুইল চেয়ার নিয়ে কিছু বহিরাগত মহিলারা চত্বরে অবস্থানে ছিল। তাদের হুইলচেয়ারগুলো জব্দ করেন। এছাড়া হাসপাতাল চত্বরে বিভিন্ন জায়গায় তালা দিয়ে রাখা হইলচেয়ার গুলো তালা ভেঙ্গে জব্দ করে। আনুমানিক ২১টি হুইলচেয়ার জব্দ করে নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানান, এই হুইল চেয়ার বহনকারীরা বড়ই বেপরোয়া। বছরের পর বছর মাসের পর মাস তারা সবার সামনে দিয়েই হাসপাতালে রোগী বহনের কাজ করেন অর্থের বিনিময়ে। হুইল চেয়ার চালকদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, রোগীদের ফুসলিয়ে হুইল চেয়ারে নেওয়ার পর বাইরের কোনো হাসপাতালে নিয়ে অর্থের বিনিময় ভর্তি করা। এদের নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক লেখালেখি হওয়ার কারণে দুই একদিন বন্ধ থাকলেও আবার তারা বীরদর্পে হাসপাতালে রোগী বহনের অবৈধ কাজে ফিরে আসে।
সুত্রগুলো আরও জানান, হাসপাতাল চত্বরে যারা হুইল চেয়ার অবৈধভাবে চালিয়ে রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে তারা বেশিরভাগই হাসপাতালের কর্মচারীদের আত্মীয় অথবা তাদের কেউ না কেউ আগে হাসপাতালে চাকরি করতো। হাসপাতালে কিছু কর্মচারী অর্থের বিনিময় এই কাজ করে থাকেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, আজকে হাসপাতাল জরুরি বিভাগ চত্বরসহ অন্যান্য জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট ২১টি হুইল চেয়ার জব্দ করেছে। হুইল চেয়ার বহনকারীর কাউকে পাওয়া যায়নি। এই হুইল চেয়ারগুলো হাসপাতালের নয়। যদি আবারও তারা হাসপাতালে ফিরে আসে, তাদের আর ঢুকতে দেওয়া হবে না। এই অভিযান চলমান থাকবে।
সারাবাংলা /এসএসআর/এসডব্লিউ