Tuesday 13 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘চট্টগ্রাম বন্দরে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিয়ে আসছে নেদারল্যান্ড’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ মে ২০২৫ ১৫:১৩ | আপডেট: ৮ মে ২০২৫ ১৭:৪৫

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দরের প্রস্তাবিত একটি টার্মিনালে নেদারল্যান্ডের এপিএম টার্মিনালস নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে নগরীর পতেঙ্গার লালদিয়ার চর এলাকায় প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আশিক চৌধুরী বলেন, ‘আমি নেদারল্যান্ডসে এপিএমর যে হেডকোয়ার্টারে গিয়েছিলাম গত পরশু এবং ওনারা বিভিন্ন দেশে পোর্ট অপারেট করেন। তো আমার সঙ্গে ওনাদের যে কথা হয়েছে, সেখানে প্রাইমারি যেটা অ্যাসেসমেন্ট, সেটা হচ্ছে যে, এখানে এই পোর্টটা করতে এটা একটা অবভিয়াসলি স্টেট অফ দি আর্ট এবং গ্রিন একটা পোর্ট হবে এবং এই গ্রিন পোর্টটা করতে ওনাদের রাফলি ৮০০ মিলিয়ন ডলারের মতো লাগবে। এই পুরাটাই এফডিআই হিসেবে বাংলাদেশে আসবে, এখানে কিন্তু সরকার কোন এক টাকাও দিচ্ছে না এবং পুরাটাই ওনারা বিদেশ থেকে ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে আনবে।’

‘বাংলাদেশের এফডিআই নাম্বারটা কিন্তু খুবই ছোট। আমাদের জেনুইন এফডিআই যেটাকে আমরা বলি যে ইকুইটি, ইকুইটি হিসেবে যে নাম্বারটা ঢোকে, সেই নাম্বারটা কিন্তু প্রতি বছরই আমাদের ৪০০, ৫০০, ৬০০, ৭০০ মিলিয়নের বেশি আসে না। তো এই একটা প্রজেক্টে যদি আমাদের ৮০০ মিলিয়ন ডলারের এফডিআই আসে এবং এপিএম-এর মতো একটা ভালো কোম্পানি থাকে, সেটা আমাদের দেশের ইকোনমির জন্য এবং ওভারঅল আমাদের ফাইনান্সিয়াল হেলথের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকার থেকে চেষ্টা করছি যে, আমাদের লং টার্ম ভিশন বা অ্যাম্বিশনের সঙ্গে এটা অ্যালাইনড।’

বিজ্ঞাপন

এপিএম প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এই কোম্পানিটা গ্লোবালি খুবই ওয়েল রেপুটেড। তাদের, তাদের অপারেশনাল এক্সপেরিয়েন্সও খুব ভালো, তারা ওই নলেজটা নিয়ে আসবে। তারা গ্রিন পোর্টের কনসেপ্ট নিয়ে আসবে বাংলাদেশে এবং আমাদের আশা হচ্ছে যে, এর মাধ্যমে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এই প্রজেক্টটাকে খুবই সিরিয়াসলি, খুবই ডেডিকেটেডলি ট্র্যাক করার চেষ্টা করছি। আমার যেটা প্রাইমারি ম্যান্ডেট, সেটা হচ্ছে ইনভেস্টমেন্ট। আর হচ্ছে জব ক্রিয়েশন বাংলাদেশের জন্য।’

‘আমরা সবসময় বলি যে, বাংলাদেশের কিন্তু প্রায় ৫০ শতাংশ পপুলেশন হচ্ছে গিয়ে ২৫ বছরের নিচে বয়স, তাই না? সো, এটা এত ইউনিক, আপনি পৃথিবীর আর কোনো দেশে এই পপুলেশন পাবেন না। তো তাদের ভবিষ্যৎ ভালো যেন হয় সেটাকে এনসিউর করার কিন্তু একমাত্র উপায় হচ্ছে আমাদের দেশকে একটা ম্যানুফ্যাকচারিং হাব করা এবং সেটার জন্য পোর্ট ক্যাপাসিটি ইজ ভেরি ইম্পর্টেন্ট।’

বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেয়ার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের লং টার্ম অ্যাম্বিশন যেটা, বাংলাদেশকে আমরা গ্লোবাল ফ্যাক্টরি বানাতে চাই। সেটার সবচেয়ে প্রাইমারি ফ্যাক্টর বা সবচেয়ে বড় ইনগ্রেডিয়েন্ট হচ্ছে পোর্ট ক্যাপাসিটি। পোর্ট ক্যাপাসিটি না থাকলে আপনি কিছু করতে পারবেন না। ওয়ার্ল্ডের যারা টপ পোর্ট অপারেটর, তাদেরকে আনার আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যে আমাদের যেই, যেহেতু আমাদের ল্যান্ড লিমিটেড, আমাদের ক্যাপাসিটি লিমিটেড, সেই লিমিটেড ক্যাপাসিটিকে যাতে আমরা বেস্ট ইউটিলাইজ করতে পারি, ঠিক আছে? সো, এই এফিসিয়েন্সির কথা যে আপনি বলছেন, আমি এক্সপার্ট না। আমাকে পোর্ট চালাতে দিলে পোর্ট ফেল করবে। কিন্তু যারা এক্সপার্ট, তাদেরকে দিয়ে চালাতে দিলে এখানে প্রোডাক্টিভিটি এফিসিয়েন্সি বাড়ানো সম্ভব।’

বিজ্ঞাপন

‘আর নিরাপত্তার ব্যাপারে আপনি যেটা বললেন, দেখেন আমাদের নেইবারিং কান্ট্রি ইন্ডিয়া, পাকিস্তানের কথা যদি বলি। এই সবাই অনেকেই ডিপি ওয়ার্ল্ড নিয়ে অনেক কথা বলে। ডিপি ওয়ার্ল্ড ইন্ডিয়াতে পাঁচটি পোর্ট চালায়, পাকিস্তানে একটা পোর্ট চালায়। সেইসঙ্গে ৬০-৭০টি দেশে পোর্ট চালায়। ইনফ্যাক্ট, মেজরিটি অফ দা গ্লোবাল পোর্ট অপারেটরস, তারা তাদের নিজেদের দেশে হয়তো একটা-দুইটা পোর্ট চালায়। কিন্তু গ্লোবালি তারা আরও ৬০-৭০টা দেশে পোর্ট চালায়। তো কারও সিকিউরিটি কনসার্ন হয় না, আমাদের এখানে সিকিউরিটি কনসার্ন হয়ে যায়। দ্যাটস আনফরচুনেট।’

তিনি বলেন, ‘আই হ্যাভ এ লট অফ ট্রাস্ট ইন বাংলাদেশ নেভি। আমি সিওর যে ওনারা জানেন যে ওনাদের নেভাল সিকিউরিটি কিভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে। ওনারা তো আমাদের সমুদ্র পাহারা দিচ্ছেন এবং খুব ভালোভাবেই দিচ্ছেন এবং খুবই লিমিটেড নাম্বার অফ ভেসেলস দিয়ে করছেন। সো, আই অ্যাম প্রিটি সিওর যে দেশের ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট, কমার্শিয়াল ইন্টারেস্ট, ওনাদের পক্ষে ম্যানেজ করা খুবই সম্ভব হবে এবং ওনারা ওটা খুব ভালোভাবে করতে পারবেন। সো, আমি এটা নিয়ে একেবারে ভয় পাই না।’

এরপর বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিদর্শন করে আশিক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে ইকোনমিক্যালি যেখানে নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করছি। সেটার সবচেয়ে সেন্টার পিস হচ্ছে গিয়ে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের এই সেন্টার পিসটার একটা অংশ আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি। এই পোর্টটা আরও এফিসিয়েন্ট হবে, সাথে আরও অনেকগুলা পোর্ট দাঁড়িয়ে যাবে। অ্যান্ড চিটাগাং উইল বিকাম বেসিক্যালি দি ট্রু কমার্শিয়াল হাব। যেটা আমরা সবসময় বলে আসছি যে, ঢাকা হচ্ছে গিয়ে পলিটিক্যাল ক্যাপিটাল। বাট আমাদের কমার্শিয়াল ক্যাপিটাল যেটা, সেটা হবে চট্টগ্রাম এবং এই ট্রেডের কারণেই হবে।

‘আমি একটু আগে আলাপ করছিলাম যে, ফরচুনেটলি আমার একটা সুযোগ হয়েছিলো গত মাসে, দুবাইয়ে যে জেবল আলী পোর্ট আছে সেখানে যাওয়ার। সেখানে আমি দেখেছিলাম, ওখানে এখন তো ফিমেল ওয়ার্কফোর্স ইজ অলসো ডিপলি ইনটু এই ইন্ডাস্ট্রিতে। তো, ওখানে পোর্ট অপারেটর যারা, ওনাদের ওনারা একটা কন্ট্রোল রুমে বসেন। ওখানে দেখলাম একজন ভদ্র মহিলা ক্রেন অপারেট করছেন। একটু আগে আমরা আলাপ করছিলাম যে, এখানে আমরা তিনটা বা চারটা পর্যন্ত রাখতে পারি কনটেইনার একটার ওপরে একটা। ওখানে ওনারা জায়গা স্পেস সংকুলানের জন্য এখন ষোলটা পর্যন্ত একটা স্ট্রাকচার দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন যেখানে আপটু সিক্সটিন কন্টেইনারস ক্যান বি পুট ওয়ান ওভার দি আদার। সো, দিজ আর এক্সাম্পলস যে এক্সাম্পলগুলাকে আমরা হয়তো ভবিষ্যতে অ্যাডাপ্ট করতে পারবো।’

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/এনজে

চট্টগ্রাম পোর্ট নেদারল্যান্ড বিডা চেয়ারম্যান বিনিয়োগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর