Saturday 10 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভূতাপেক্ষ অনুমোদন পেল ৯টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ মে ২০২৫ ১৪:৩৬ | আপডেট: ১০ মে ২০২৫ ১৬:৪৩

ঢাকা: দেশে ৯টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সম্প্রতি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর পরিচালনা পর্ষদের ৮ম সভায় এগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।

জানা যায়, অনুমোদিত ৯টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে ৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলই বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে নীতিগত বা প্রাথমিক অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। বাকী দুটির অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এবার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পেল।

বিজ্ঞাপন

বেজা সূত্রে জানা যায়, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর অনুমোদন কার্যক্রম সংস্থার নৈমিত্তিক বা রুটিন কার্যাবলির অংশ। অনুমোদিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে ২টি সরকারি, ২টি জিটুজি (সরকারি পর্যায়ে) চুক্তিভিত্তিক ও ৫টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে। নতুন অনুমোদিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর জন্য মোট জমির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৫৭৪ একর।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, সরকারি যে ২টি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা সদরে ১১৩ একর জমিতে গড়ে তোলা হবে ‘সাতক্ষীরা অর্থনৈতিক অঞ্চল’। গত ২০২২ সালে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

আর রংপুরে কাউনিয়া সদর উপজেলায় ৪২৮ একর জমিতে ‘রংপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল (কাউনিয়া)’ এর নীতিগত অনুমোদন দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি বছরের গত জানুয়ারিতে এর অনুমোদন দেওয়া হয়।

সূত্র মতে, জিটুজি ভিত্তিতে যে ২টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে চাঁদপুরে ‘চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল’ প্রায় ৩ হাজার ৩৭ একর জমিতে হবে। এ জোন স্থাপনে ঢাকাস্থ চীনা দুতাবাস ২০২৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে।

বিজ্ঞাপন

কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলায় ধরলা নদীর পাশে মাধবরাম গ্রামে প্রস্তাবিত ভুটান বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল -ছবি: সংগৃহীত

আর কুড়িগ্রামে ২০০ একর জমিতে জিটুটি ভিক্তিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করবে ভুটান। এ জোন স্থাপনে গত ২০২৪ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশে সরকারের সঙ্গে ভুটার সরকারের চুক্তি সই হয়।

এছাড়া ৫টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই) এর ২টি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ‘কুমিল্লা অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গড়ে তোলা হবে ৩৬০ একর জমিতে। গত ২০২২ সালে এর চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়া হয়। এ জোনটিতে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ২৫০ কোটি বিলিয়ন ডলার এবং কর্মসংস্থান তৈরি করবে প্রায় ৫০ হাজার।

আর ‘তিতাস ইকোনমিক জোন’টি ২০২৩ সালে প্রাক-যোগ্যতাপত্র পায়। ১৬০ একর এলাকা জুড়ে গড়ে তোলা হবে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি।

অন্যন্যের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলায় ৯৩ একর জমিতে ‘পূর্বগাঁও অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন করছে সিটি গ্রুপ। অঞ্চলটি ২০২২ সালে নীতিগত ও ২০২৪ সালের ৫ মার্চ চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।

ভোলা সদর ও দৌলতখান এলাকায় ‘ভোলা ইকো ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক জোন’টি ২০২৪ সালের ৪ জুলাই নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। চীনা মালিকানাধীন ‘লিজ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড’ ১০২ একর জমিতে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি স্থাপন করবে।

নরসিংদী সদরে ‘আমানত শাহ স্পেশাল ইকোনেমিক জোন’টি ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর প্রাক-যোগ্যতার অনুমোদন দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। প্রায় ৩৬ একর জমিতে আমানত শাহ গ্রুপ এ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করবে।

বেজা সূত্র জানায়, জিটুজি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য চীন, ভুটান ও নেপালের হাইকমিশনের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় ও যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। তবে দ্বিপাক্ষিক জটিলতার কারণে জিটুজি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো স্থাপনের কাজ ধীরগতিতে এগুচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর কাজ নিজস্ব গতিতে চলবে। তবে বেসরকারি অঞ্চলের অনুমোদন ও সেবা প্রদানে নির্দিষ্ট সময়সীমাভিত্তিক পদ্ধতি মেনে চলা হবে।

সূত্র মতে, এখন সামাজিক ও পরিবেশগত বিষয় মেনে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো করা হবে। পরিবেশগত আধুনিকায়ন সূত্র মানা হবে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়া কোনো অর্থনৈতিক অঞ্চলকে প্রাক-যোগ্যতা লাইসেন্স দেওয়া হবে না।

এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিল্প খাতে গ্যাস সরবরাহ একটা বড় সমস্যা। বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীসহ অনেক বিনিয়োগকারী অবকাঠামোতে বিপুল বিনিয়োগ করেও বছরের পর বছর গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। সময়মতো ইউটিলিটি সংযোগ পাওয়া না গেলে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়ার পরও নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বিনিয়োগ ধরে রাখা কঠিন হবে।

সারাবাংলা/আরএস

৯টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল বেজা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর