ঢাকা: শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার বলেছেন, শুধুমাত্র প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালায়ই নয়, সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা কি হওয়া উচিত এই স্লোগানের মধ্যে অন্তর্নিহিত রয়েছে। তাই আমাদের সীমিত সম্পদ, সরকারে আমাদের সীমিত সময় ও সুযোগের মধ্যে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সকলকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
শনিবার (১০ মে) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মাল্টিপারপাস কনফারেন্স হলে, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন ও প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা লালনের দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। দুই মন্ত্রণালয়ে আমাদের এমন কিছু কাজ করা প্রয়োজন যাতে আজকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেল তাদের এই প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করা যায়।
উপদেষ্টা আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দেশ গড়ার কারিগরদের তৈরি করার প্রতিষ্ঠান। এখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু একটা করার ক্ষেত্রে সরকারের সময় কম হলেও আমি দায়িত্বের চাপ অনুভব করছি। ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন ধাপগুলি পেরিয়ে শিক্ষার্থীদের টারসিয়ারি ইনস্টিটিউশন পর্যন্ত দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্র বহন করছে উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলো এ দায়িত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্পণ করেছে। কিন্তু আমরা জানি বহুলাংশে সেগুলোর ক্ষেত্রে নানা রকমের ব্যত্যয় রয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা এটা বুলি নয়। শিক্ষকরা শুধু চাকুরি করতে আসেন না, তারা শিক্ষার্থীদের দেশ গাড়ার কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব তারা নিয়েছেন। আমাদের সম্পদের অপ্রতুলতার কারণে শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মান দিতে পারছি না। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব রয়েছে এই মহান পেশায় যে শিক্ষকরা রয়েছে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেয়ার। প্রাইমারি শিক্ষক থেকে শুরু করে বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য পর্যন্ত আমাদের আচার-আচারণে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেয়া উচিৎ। আজকের প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি আমরা শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত রাখবো।
তিনি আরও বলেন, গর্ভানিং বডি ছাড়া যারা অভিভাবক রয়েছেন তারা যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর রাখেন তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সমস্যা থাকবেনা। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান, আবৃতি, খেলাধুলা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হবে, পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটবে। এ সকল আয়োজনে অভিভাবক ও সমাজের সকল স্তরের লোকজনের সহযোগিতা প্রয়োজন। শিক্ষা হচ্ছে বৈষম্য দূরীকরণে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার। একটি শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য শিক্ষা বড় রকমের ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার্থীদের উপর থেকে পড়ার চাপ কমিয়ে তাদের নাচ, গান, আবৃতি ও খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলার আহ্বান জানান তিনি ।
আলোচনা সভা শেষে বিজয়ীদের মাঝে প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ প্রদান করা হয়েছে।
‘মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করি, বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’-এই স্লোগান নিয়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে।
অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মাননীয় উপদেষ্টা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা।