Monday 12 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাজের ব্যাখ্যা চেয়েছেন ফয়সাল, অন্যথায় অপসারণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ মে ২০২৫ ২০:০০ | আপডেট: ১০ মে ২০২৫ ২২:৫৪

ঢাকা: দায়িত্ব গ্রহণের পর পুঁজিবাজারের জন্য কী কাজ করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সজেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এর কাছে এর ব্যাখ্যা দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল।

তিনি বলেন, অন্যথায় আপনার অপসারণ এখনই চাইবো। আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিএসইসির চেয়ারম্যান হয়েছেন, অথচ আপনার ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই।

বিজ্ঞাপন

‘বর্তমান চেয়ারম্যানের যোগাযোগ দক্ষতা খুবই বাজে। তাকে এ বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে হবে’- এমন মন্তব্য করে আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, বিএসইসির চেয়ারম্যান কোনো আপডেট দেন না। তিনি কী কাজ করছেন এবং তার প্রতিফলন কী, সেগুলো বিনিয়োগকারীদের জানাতে হবে। শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কাউকে পাত্তা দেবেন না, তা হবে না।

শনিবার (১০ মে) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ফয়সাল বলেন, বিএসইসি‘র উদ্যোগ প্রশংসনীয়, কিন্তু অসম্পূর্ণ। আমরা স্বীকার করি, গত ৮ মাসে বিএসইসি কিছু প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে, যা আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ডিএসই সূচক ৪ হাজার ৯০০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এই পতনের পেছনে রয়েছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা (সংঘাত), অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, চলমান উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং পাঁচ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ডে ১২.৩৯ শতাংশ সুদের হার। যা বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজার থেকে সরকারি বন্ডে টেনে নিচ্ছে। তবুও শেয়ারবাজার এখন ঐতিহাসিকভাবে সস্তা। পিই রেশিও মাত্র ৯.৪১, যা ইঙ্গিত দেয় এটা ভ্যালু ইনভেস্টমেন্টের জন্য দুর্দান্ত সুযোগ।

বিজ্ঞাপন

শনিবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল -ছবি : সংগৃহীত

এনসিপি’র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বর্তমান সংকটময় সময়ে পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এ সময় পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ১১ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি। এগুলো হচ্ছে-

শেয়ার ক্যাটাগরি নির্ধারণে শুধু ডিভিডেন্ডের ভিত্তি নয় বরং কোম্পানির দেউলিয়াত্ব বা বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ সূচক বিবেচনায় আনা;

ক্যাপিটাল গেইন ও ডিভিডেন্ড ইনকামে দ্বৈত কর পরিহার করে বিনিয়োগকারীদের জন্য করের হার যৌক্তিক পর্যায়ে আনা;

মিউচ্যুয়াল ফান্ডে পেশাদার ব্যবস্থাপনা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং যেসব ফান্ডে অর্থের অপব্যবহার হয়েছে, সেগুলোর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা এবং একই সঙ্গে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে প্রাপ্ত ডিভিডেন্ডে কর রেয়াত প্রদান;

তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে আরও বেশি পার্থক্য আনা- যেন আরও কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হয়;

অ্যাসেট ব্যাকড সিকিউরিটিজের ট্রান্সফারে কর মওকুফ করা- যেন বিকল্প বিনিয়োগ মাধ্যমের বিকাশ ঘটে;

অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ সংস্কার ও দেউলিয়াত্ব আইন দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যাংক ও করপোরেট রিকভারি প্রক্রিয়া গতিশীল করা;

কারেন্সি ট্রেডিং ও শট সেল চালু করে বাজারে তরলতা বাড়াতে হবে, যেন বিনিয়োগকারীর জন্য আরও কার্যকর সুযোগ তৈরি হয়;

ডিমান্ড সাইড শক্তিশালী করতে প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ফান্ড, সোল্ডারেইন ওয়েলথ ফান্ড বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের বিনিয়োগে কর কাঠামো স্থির ও বিনিয়োগবান্ধব করা;

ফ্লোর প্রাইস ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে পরিহার করা, কারণ এটি বাজারের স্বাভাবিক গতি ও আস্থার পরিপন্থি;

বিএসইসি, স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্রোকার, এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বচ্ছ ও নিয়মিত যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি আস্থাশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজার গড়ে তোলা;

স্থানীয়ভাবে ইনভেস্টমেন্ট সামিট আয়োজন করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা।

সারাবাংলা/আরএস

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল পুঁজিবাজার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর