সুনামগঞ্জ: জেলার ১২ কিলোমিটার সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা ও অতিরিক্ত টহলের ব্যবস্থা করেছে বিজিবির ২৮ ব্যাটেলিয়ন। এ এলাকায় ভারতের অংশে শুক্রবার (৯ মে) রাত আটটা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত কারফিউ জারি করায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ বিজিবি’র দায়িত্বশীলরা জানান, সিলেটের ৪৮ বিজিবির সীমানা শুরু হয়েছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত এলাকা থেকে। এই উপজেলার বাঁশতলা, পেকপাড়া— বাগানবাড়ীতে থাকা বিজিবি ক্যাম্পের ঠিক উলটোদিকে ভারতীয় কতৃর্পক্ষ রাত আটটা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি করেছে, এটি কবে নাগাদ শিথিল হবে এটিও বলা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় বাংলাদেশি নাগরিক যারা অবৈধপথে ভারত যায় তাদেরকে শনিবার (১০ মে) সভা করে, জনে জনে আলোচনা করে সতর্ক করা হয়েছে।
বিজিবি’র ওই কর্মকর্তা জানান, বিএসএফ এর দুই নম্বর ব্যাটেলিয়নের সীমান্ত এলাকায় কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে। দুই নম্বর বিএসএফ ব্যাটেলিয়ন এলাকায় সিলেটের ৪৮ ব্যাটেলিয়নের সঙ্গে সুনামগঞ্জের ৯০ কিলোমিটার সীমান্তের ১২ কিলোমিটার পড়েছে। অন্য ৭৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান থাকলেও, ওদিকেও সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজিবিকে।
বিজিবির দায়িত্বশীল অনেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুশ ইন হচ্ছে। এটি রোধ করার নির্দেশনা আছে বিজিবির। মিয়ানমারের অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে ভারতে যাচ্ছে বা ঢুকে গেছে, তাদের পুশ ইন। আবার বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে তাদের এবং মিয়ানমার থেকে ভারতে গেছে তাদেরকেও বাংলাদেশে পুশ ইন করার ঘটনা ঠেকাতে বিজিবিকে তৎপর থাকতে বলা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির অধিনায়ক জাকারিয়া কাদির বলেন, ‘বিজিবির চোখ এড়িয়ে অনেক সময় ভারতে চলে যায় সীমান্তের লোকজন। কেউ যেন ওপারে গিয়ে কারফিউয়ের মধ্যে পড়ে মহাবিপদে না পড়ে সেজন্য সীমান্তে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা, সচেতনতা কার্যক্রম ও অতিরিক্ত টহলের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারফিউ কতদিন চলবে তা বলা যাচ্ছে না। জেলার অন্য সীমান্ত এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা থাকলেও সতর্ক থাকার নির্দেশ আছে।’
প্রসঙ্গত, এই সীমান্ত পথের কোনো কোনো এলাকায় কাঁটাতারের বেড়াও নেই। ওই পথ দিয়ে এই সময়ে গরু, পেঁয়াজ, চিনি, বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় মসলা, চকলেটসহ নানা প্রসাধন পণ্য, মাদকসহ ভারতীয় মালামাল। বাংলাদেশে থেকে ভারতে যাচ্ছে ইলিস মাছ, শিং মাছ, সুপারীসহ নানা দেশীয় পণ্য।