Saturday 10 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে চায় না: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ মে ২০২৫ ২০:৪০ | আপডেট: ১০ মে ২০২৫ ২২:৫৪

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (১০ মে) বিকেলে নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে ‘তরুণদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে’ তিনি একথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা যখন আজ পলোগ্রাউন্ডে সভা করছি, তখন চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে একটা সভা হচ্ছে। ঢাকায় সভা হচ্ছে। দাবি কি? আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। শুধু যারা সভা করছেন তারা নয়, এই পলোগ্রাউন্ডে যত মানুষ আছে, কেউ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না। আমরা দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চাই না।’

‘কারণ, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকে দেশের মানুষকে নির্যাতন করে এসেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলের শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। চারটা পত্রিকা রেখে সব বন্ধ করে দিয়েছিল। অর্থনীতি বন্ধ করে দিয়েছিল, জিয়াউর রহমান সাহেব এসে সেটা খুলে দিয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘অনেকে সংস্কার, সংস্কার বলেন, আরে প্রথম সংস্কার তো করেছে জিয়াউর রহমান। একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। আজকের অর্থনীতির যে ভিত্তি, এটাও শুরু করেছিলেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।’

‘আর আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নয় বছর মাঠে-ঘাটে ঘুরে সংগ্রাম করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। এরশাদকে পরাজিত করে আমাদের হাতে ভোটের অধিকার তুলে দিয়েছিলেন। একটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি যাতে তৈরি হয় সেজন্য কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি চালু করেছিলেন।’

বিজ্ঞাপন

কিছু মানুষ সব ভুলিয়ে দিতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু মানুষ সব ভুলে যায়। সব ভুলিয়ে দিতে চায়। মনে করে তারা বাইরে থেকে লেখাপড়া শিখে এসে আমাদের সামনে সুন্দর সুন্দর মুখরোচক কিছু কথা বললেই জাতি বোধহয় সব ভুলে যাবে। তাদের বলব, দয়া করে আজকের সমাবেশটা দেখে যান। এটা দেখে যদি আপনাদের সম্বিত ফিরে আসে তাহলে জাতি উপকৃত হবে। সোজা হিসাব, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘আজ তরুণরা জেগে উঠেছে। তারা চাকরি চায়, ব্যবসা চায়, কর্মসংস্থান চায়। আমাদের নেতা তারেক রহমান আধুনিক বিশ্বের উপযোগী তারুণ্য গড়ে তুলতে চান।’

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে, এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে আমরা কোনোমতে কোনোকিছু করতে দেব না। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা আপসহীন। সেজন্য আমাদের নেতা বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ।’

চট্টগ্রামে শহিদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের নাম পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সারাবাংলা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সারাবাংলা

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এই তরুণরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা হঠানোর মূল শক্তি। ওয়াসিম আকরামের জীবন দিয়ে এ আন্দোলন সফল করেছে। সেদিন ছাত্রদল-যুবদল বুক পেতে দিয়েছে গুলির সামনে। আমাদের নেতাকর্মীরা ১৬ থেকে ১৮ বছর আন্দোলন করেছে। মামলা, হামলা, গুম-খুনের শিকার হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে অনেক নেতাকর্মীর। যার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেই গণতন্ত্র যেন কেউ জিম্মি করতে না পারে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কারও যদি দর্শন থাকে, ভাবনা থাকে, কর্মসূচি থাকে তাহলে তাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। কিন্তু কারও স্বার্থের জন্য দেশকে জিম্মি করা যাবে না। মানুষের মধ্যে নতুন যে ভাবনা এসেছে তা বুঝতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে।’

‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা শুনি, ৩১ দফার মধ্যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা অনেক আগে বলেছে বিএনপি। খালেদা জিয়া বলেছেন, তারেক রহমান বলেছেন।’

খসরু আরও বলেন, ‘কোনো দলকে তো সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জনগণের কাছে যেতে দেখিনি। আমরা কেন যাচ্ছি, আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটের জন্য, জনগণ ভোট দিলে আগামীতে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা হবে। সরকার গঠন করলে সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। এখানে কোনো কিছু অস্পষ্ট নেই, দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।’

‘বাংলাদেশে নির্বাচনি হাওয়া বইতে শুরু হয়েছে, এটা কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। গণতন্ত্রের পথে কেউ যাতে রুদ্ধ করতে না পারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে এগিয়ে যাব, কারও উসকানিতে পা দেওয়া যাবে না। এটা তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত।’

সমাবেশে জনপ্রিয় ক্রিকেটার চট্টগ্রামের সন্তান তামিম ইকবালের মঞ্চে উপস্থিতি ও বক্তব্য ছিল বাড়তি আকর্ষণ।

স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাৎ হোসেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান এবং চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ বক্তব্য দেন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

আওয়ামী লীগ আমীর খসরু চায় না টপ নিউজ বিএনপি মির্জা ফখরুল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর