ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে প্রস্তুত রাশিয়া বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) তুরস্কের ইস্তানবুলে এই আলোচনা আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১০ মে) রাতে এক টেলিভিশনে ভাষণে পুতিন বলেন, ‘আমরা চাই আগামী ১৫ মে ইস্তানবুলে আলোচনা শুরু হোক। কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই এই আলোচনা হওয়া উচিত।’
পুতিন আরও বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে গুরুতর আলোচনা করতে প্রস্তুত। এই আলোচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে সংঘাতের মূল কারণ দূর করা এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই শান্তির ভিত্তি তৈরি করা।’
এই প্রস্তাব আসার কয়েক ঘণ্টা আগেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কিয়েভে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং পোল্যান্ডের নেতারা পুতিনকে ১২ মে (সোমবার) থেকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানান। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানান, এটি না মানলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে হোয়াইট হাউসও। ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক যৌথ ফোনালাপের পর এটি নিশ্চিত করা হয়।
পুতিনের প্রস্তাবের কিছুক্ষণ পর ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ পোস্ট করেছেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের জন্য এটি একটি সম্ভাব্য অসাধারণ দিন। আমি উভয় পক্ষের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব যাতে এটি বাস্তবায়িত হয়।
২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রথম দিকের পর থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আর কোনো সরাসরি আলোচনা হয়নি। পুতিন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি আলোচনা করবেন।
গত দুই মাস ধরে ইউক্রেন ৩০ দিনের তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ দাবিকে সমর্থন করছে ইউরোপীয় মিত্ররাও, এমনকি ট্রাম্প প্রশাসনও।
রাশিয়া এখনও সরাসরি এতে সম্মতি দেয়নি। তারা বলছে, নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতির পক্ষে, তবে কিছু জটিলতা আছে যেগুলো আগে সমাধান করতে হবে।
পুতিন দাবি করেন, মস্কো কখনও সংলাপ প্রত্যাখ্যান করেনি, সিদ্ধান্ত এখন ইউক্রেনের ওপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, ‘এই আলোচনার সময় হয়তো নতুন কোনো অস্ত্রবিরতি বা যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।’
ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানকে নিজের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে নিয়েছেন এবং পুতিনকে রাজি করাতে ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বিভিন্ন ব্যতিক্রমধর্মী ছাড় দেওয়ার পরও রাশিয়া এখনো ৩০ দিনের সীমিত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়নি, যা একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তির পথে প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচিত।