ঢাকা: বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার মামলায় ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এরমধ্যে দুইজনের যাবজ্জীবন ও ৯ জনের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন- মাওলানা তাজউদ্দিন ও শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল। তারা দুই জনই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন।
১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আবদুল হাই, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু বকর, মুফতি শফিক, মাওলানা আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ও মাওলানা শওকত ওসমান। তাদের সবাইকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিন সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো বহুল আলোচিত এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় পড়া শুরু হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আকতার রুবি। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান, মোহাম্মদ শিশির মনির ও আবদুল্লাহ সাদিক।
এর আগে, ৮ মে প্রথম দিন মামলার সাক্ষ্য ও জেরাসহ অংশিক রায় পাঠ করা হয়। বাকি অংশ ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
২০১৪ সালের ২৩ জুন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন। রায়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ আটজনের ফাঁসি ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা।
২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুরু হয় মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি। একই বছরের ১৪ মার্চ চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করা হয়। এরমধ্যেই মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন আদালত। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এসএম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে যায়।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৯ জন নিহত হন। হাসপাতালে মারা যান আরও একজন। একইসঙ্গে অনেকেই আহত হন। এ ঘটনায় রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ।
সারাবাংলা/আরএম/ইআ