ঢাকা: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর চলমান ঋণের শর্তানুযায়ী মার্কিন ডলারের বিনিময় হার আরও নমনীয় করতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রেক্ষিতে আগামী জুনে ঋণের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার ছাড় করা হতে পারে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার (১৪ মে) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে পারেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। আইএমএফ এর পক্ষ থেকেও শিগগিরই এ সংক্রান্ত ইতিবাচক তথ্য বা ঘোষণা পাওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গভর্নর এ মুহুর্তে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে তিনি ভার্চ্যুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হবেন।
প্রসঙ্গত: ঋণের শর্ত পরিপালন ও কিস্তির অর্থ ছাড় নিয়ে অতি সম্প্রতি (৫ ও ৬ মে) আইএমএফ এর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের দু’দফা ভার্চ্যুয়াল বৈঠক কোনো সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়েছে বলে জানা যায়।
এর আগে আইএমএফের সঙ্গে বিনিময় হার নিয়ে প্রায় এক মাস ধরে দর-কষাকষি চলে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তির পর্যালোচনা করতে গত ৬ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত আইএমএফের একটি মিশন ঢাকা ঘুরে যায়। তাতেও কোনো সমঝোতা হয়নি। আলোচনা গড়ায় আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠক পর্যন্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল ওই বৈঠক হয়। কিন্তু সেখানেও কোনো সমঝোতা হয়নি।
এ প্রেক্ষিতে বিনিময় হারে নমনীয় করা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ডলারের দাম এখন যে পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হচ্ছে, ভবিষ্যতেও সেভাবেই হবে। তবে বাজারের চাহিদার ওপর নির্ভর করে দাম আরও হ্রাস/বৃদ্ধির সুযোগ থাকবে।
প্রসঙ্গত: টাকা-ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে যে পদ্ধতি ঠিক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, সেটি ‘ক্রলিং পেগ’ নামে পরিচিত। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতি ডলারের বিপরীতে বর্তমানে ১১৯ টাকা দামের সঙ্গে ২ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়তে ও কমতে পারে। এর ফলে ডলারের দাম এখন সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। তা থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৩টি কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ কিস্তির ক্ষেত্রে এসে আটকে যায় অর্থছাড়। সরকারের পক্ষ থেকে তখন বলা হচ্ছিল, আগামী জুন মাসে দুই কিস্তি একসঙ্গে পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু একপর্যায়ে তাতেও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এই ঋণের বাকি আছে আরও ২৩৯ কোটি ডলার।