Tuesday 13 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নীতিমালা জারি
কর অব্যাহতির ক্ষমতা পাচ্ছে সংসদ, রহিত হচ্ছে এনবিআরের ক্ষমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৩ মে ২০২৫ ২১:৪০ | আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ২২:০৫

ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: সকল ধরনের কর অব্যাহতির ক্ষমতা বিলুপ্ত হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। আগামীতে ১ জুলাই থেকে সকল ক্ষেত্রে কর অব্যাহতির পূর্ণ ক্ষমতা পাচ্ছে জাতীয় সংসদ। তবে সংসদ কার্যকর না থাকলে এ বিষয়ে বিধান জারি করবেন রাষ্ট্রপতি।

এনবিআর কর্তৃক সদ্য প্রণীত ‘কর ব্যয় নীতিমালা এবং এর ব্যবস্থাপনা কাঠামো’ শীর্ষক নীতিমালায় এমন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (১২ মে) এটি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ১ জুলাই থেকে এ নতুন নীতিমালা কার্যকর হবে।

বিজ্ঞাপন

নীতিমালায় বলা হয়েছে- আয়কর আইন, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন এবং কাস্টমস আইনের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে প্রদত্ত কর অব্যাহতির সকল ক্ষমতা রহিত করা হবে। কোনো কর ব্যয় উপস্থাপন, সংশোধন, রহিতকরণ, পরিবর্ধন বা এর কাঠামো নির্ধারণের দায়িত্ব অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত থাকবে; এবং প্রণীত করব্যয় সমূহ সংশ্লিষ্ট আইনের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী/অর্থ উপদেষ্টা কর্তৃক জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বার্ষিক জাতীয় বাজেট প্রণয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, বিভিন্ন কর আইন সংশ্লিষ্ট যে কোনো কর ব্যয় অনুমোদনের চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ হবে জাতীয় সংসদ। সংসদ না থাকলে কর ব্যয় সংক্রান্ত বিধান জারির ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নিকট ন্যস্ত থাকবে।

তবে বৃহত্তর জনস্বার্থে ও জরুরি প্রয়োজনে মন্ত্রী পরিষদ কিংবা উপদেষ্টা পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে অর্থমন্ত্রী/অর্থ উপদেষ্টা সাময়িক কর ব্যয় অনুমোদন দিতে পারবেন, কিন্তু এর মেয়াদ সংশ্লিষ্ট অর্থ বছরের শেষ দিনের বেশি হবে না। এর বেশি সময়ের জন্য সেটি কার্যকর রাখতে হলে সংসদের অনুমোদন নিতে হবে। কর অব্যাহতির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ভূতাপেক্ষভাবে কার্যকারিতা দেওয়া যাবে না।

বিজ্ঞাপন

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কর অব্যাহতির প্রস্তাবনার ক্ষেত্রে সেটির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হতে হবে এবং এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ আবশ্যিকভাবে সরকারের সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও প্রযুক্তিগত বা অন্য কোনো নীতির উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে হতে হবে। জাতীয় সংসদে উত্থাপিত কর ছাড় সংক্রান্ত প্রতিটি প্রস্তাবের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে ওই কর ছাড়ের কারণে প্রাপ্ত সুবিধা, রাজস্ব ছাড়ের পরিমাণ এবং রাজস্ব ছাড়ের বণ্টনজনিত প্রভাব সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

নীতিমালায় অনুযায়ী, যেসব ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হবে, সেগুলোর কর সুবিধা সমাপ্তির তারিখ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। নীতিমালা কার্যকরের পর প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া যাবে। কর অব্যাহতির নির্দিষ্ট মেয়াদকাল উত্তীর্ণ হওয়ার পর মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি নিরুৎসাহিত করা হবে। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়াতে হলে কর সুবিধার কার্যকর ফলাফল এবং কর ব্যয়ের পরিমাণ পর্যালোচনার ভিত্তিতে সময়বৃদ্ধির আইনানুগ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত থাকবে। জাতীয় সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে কর অব্যাহতি অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত রাখা যাবে।

এদিকে, বর্তমানে যেসব ক্ষেত্রে কর অব্যাহতির মেয়াদ উত্তীর্ণের কোনো তারিখ নেই অর্থাৎ অনির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কর অব্যাহতির সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো আগামী ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সংসদে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, কর অব্যাহতির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কিংবা অর্থ উপদেষ্টা ব্যতীত কোনো মন্ত্রী, সরকারের কোনো সংস্থা জাতীয় সংসদে অনুমতির লক্ষ্যে কর সংশ্লিষ্ট বিল বা অর্থবিলে অন্তর্ভুক্তির উদ্দেশে আইনানুগভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবেন না।

তবে আন্তর্জাতিক কনভেনশন, দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি, কর সংশ্লিষ্ট কোনো চুক্তি, দ্বৈত কর পরিহার সংক্রান্ত চুক্তির আওতায় কর পরিহার সংক্রান্ত কোনো চুক্তির আওতায় অনুমোদিত কর ছাড়সমূহ এবং কর আইনসমূহ নীতিমালার ওপর প্রাধান্য পাবে।

কর অব্যাহতি ব্যবস্থা বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি কেন্দ্রীয় তথ্য সংগ্রহ রক্ষণাগার স্থাপন করবে, কর অব্যাহতির সুবিধা যাতে অন্য কেউ লাভ করতে না পারে সেজন্য একটি বিশেষায়িত যাচাইকরণ পদ্ধতি প্রণয়ন এবং অবৈধ সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিতকরণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে নীতিমালায়।

সারাবাংলা/আরএস

এনবিআর কর অব্যাহতি জাতীয় সংসদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর