ঢাকা: ঢাবি উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খাঁন ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবি করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস। এ সময় উপাচার্যকে ‘ফাদার অব মবোক্রেসি’ আখ্যা দেন তিনি।
রোববার (১৮মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ উপাচার্য- প্রক্টরের পদত্যাগ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাবি শাখা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে ঢাবি ছাত্রদলের একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বর হয়ে কলা অনুষদের সামনে অপরাজেয় বাংলায় এসে শেষ হয়।
সাহস বলেন, ‘৫ আগস্টের পর ছাত্র রাজনীতি চায় না বলে একটা সাধারণ শিক্ষার্থী নামধারী কিছু গুপ্ত সংগঠনের কর্মীরা মবোক্রেসি করেছে। আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি কারা এটিকে উসকে দিচ্ছে। আমরা জানতে পেরেছি এই ভিসির সাহায্যে তারা এই মব করেছে। আজ থেকে এই ভিসিকে আমি মাননীয় বলা বাদ দিয়ে ‘ফাদার অব মবোক্রেসি’ বলে আখ্যা দিলাম।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘খুনি কেন বাইরে, প্রশাসন কী করে’, ‘আমার ভাই মরল কেন, শাহবাগ থানা জবাব চাই’সহ নানা স্লোগান দেন।
মিছিল শেষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস আরও বলেন, ‘গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যেই সাম্য হাসিনাকে খুনি হাসিনা বলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিত, সে সাম্য আজ আমাদের মাঝে নেই। যেই প্রশাসন রক্তের উপর দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে প্রশাসনের আন্ডারে এখন পর্যন্ত ক্যাম্পাসে দুটি খুন সংগঠিত হয়েছে। এছাড়াও তার সময়ে চারুকলায় ফ্যাসিস্টের মোটিভ পোড়ানো হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ধর্ষণ হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আপনি সাম্য হত্যার রাতে সাম্যর ভাইদের সঙ্গে যেই বালখিল্য আচরণ করেছেন তার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করবেন এবং জরুরি ভিত্তিতে প্রক্টরের পদত্যাগ নিশ্চিত করবেন।’
সমাবেশে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ‘জুলাই-আগস্টকে বিক্রি করে একদল শিক্ষার্থী টেন্ডার বাণিজ্য করছে। তাদের কোনো ক্ষমা করা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা জুলাই রক্তের উপর দিয়ে প্রশাসনে বসেছেন। ছাত্রদল গত ৯ মাস প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু এখন পদত্যাগ চাওয়ার কারণ প্রশাসন জুলাই-আগস্টের সম্মুখ সারির নেতৃত্ব সাম্য হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একদল শিক্ষার্থী দেখছি, তারা নাকি সাধারণ শিক্ষার্থী। যারা স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি, তারা সাম্য হত্যাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে। আপনাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, যারা ভারতের দালালি করেছে তারা ভারতে পালিয়েছে। আপনারাও কারোর দালালি করলে আপনাদেরও পালাতে হবে।’
এ সময় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে তারা শাহবাগ থানার দিকে রওনা হন।