রাজবাড়ী: কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ২০মণ ওজনের শাহীওয়াল জাতের একটি বিশাল বড় ষাঁড়। মালিক শুভাষ শিকদার সন্তানের মতো করে চার বছর ধরে লালন-পালন করছে ষাঁড়টিকে। গরুর মালিক সুঠামদেহী লাল রঙের ষাঁড়টির নাম রেখেছেন রাজবাড়ীর ‘রাজা’। বর্তমানে গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে আট লাখ টাকা।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানিবহ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শুভাষ শিকদার (৬১)। প্রায় চার বছর ধরে নিজ বাড়িতেই লালন-পালন করছেন রাজাকে। ছয় দাঁতের হালকা বাদামি রংয়ের রাজার ওজন প্রায় ২০ মণ। উচ্চতা ৬ ফুট ও দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ ফুট। বুকের চওড়া সাড়ে ৬ ফুট। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এবার বাজার মাতাবে এই রাজা।
শুভাষ শিকদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় চার বছর ধরে রাজাকে আমি সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি। এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বিক্রির জন্য রাজাকে প্রস্তুত করছি। এটার ওজন ১৮ থেকে ১৯ মণ হবে। এটি শাহীওয়াল জাতের। আমি শুকনো খড়, ভুট্টা, খেসারি ও জবের সংমিশ্রণে তৈরি ভুসি খাওয়াই রাজাকে। এছাড়া আমি নিজে কাঁচা ঘাস কেটে এনে সেই ঘাস খাওয়াই। তাকে প্রতিদিন দুই বেলা গোসল করাই। রাজার জন্য ২৪ ঘণ্টায় চালিয়ে রাখতে হয় ফ্যান ও লাইট।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গ্রামাঞ্চলের মানুষ। শহরের হাট-বাজার খুব বেশি একটা চিনি না। আর চিনলেও আমার দ্বারা এত বড় গরু হাটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা সম্ভব না। আমার ইচ্ছে ভালো দাম পেলে বাড়ি থেকেই রাজাকে বিক্রি করে দেব। রাজাকে বিক্রির জন্য আট লাখ টাকা দাম হাঁকাচ্ছি।’

২০মণ ওজনের শাহীওয়াল জাতের ষাঁড়। ছবি: সারাবাংলা
সুবাস শিকদারের ছেলে প্রশান্ত শিকদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাবা চার/পাঁচ বছর ধরে গরুটা লালনপালন করছে কষ্ট করে। আমরা সবাই তাকে সহযোগিতা করেছি। অনেক টাকা খরচ হয়েছে এর পেছনে। যদি কেউ কিনতে চান, তাহলে তারা যেন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গরুটা বিক্রির টার্গেট আট লাখ টাকা।’
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ৪৭ হাজার ৯৬৩টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ২৪ হাজার ২৬০টি, মহিষ রয়েছে ২৩২টি, ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য মিলে ২৩ হাজার ৪৭১টি। আর এবার কোরবানির জন্য গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে ৪১ হাজার ৬০১টি। উদ্বৃত্ত থাকবে ৬ হাজার ৩৬২টি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রশান্ত শিকদার একটা গরু মোটাতাজাকরণ করেছে। গরুটি শাহীওয়াল জাতের। বয়স প্রায় চার বছর। ওজন হতে পারে ১৭ থেকে ১৮ মণ। ষাঁড়টি সে প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজাকরণ করেছে। খুব সুন্দর সুস্থ একটা গরু। তিনি আমাদের প্রাণিসম্পদ দফতরে যোগাযোগ করেছে এবং আমাদের পরামর্শে লালন-পালন করেছে।’