Monday 19 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চোর আখ্যা দিয়ে মারধর
চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া ব্যক্তিটি বেঁচে আছেন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৯ মে ২০২৫ ২৩:২৮ | আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ২৩:৫৯

চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া মতিউর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া: রোববার (১৮ মে) থেকে ফেসবুকের টাইমলাইন জুড়ে একটি ভিডিও ভেসে বেড়াচ্ছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে- এক ব্যক্তি চলন্ত ট্রেনে ঝুলে যাচ্ছেন, ভেতর থেকে কেউ তার হাত ধরে রয়েছেন। ঝুলে থাকা ব্যক্তিটি ট্রেনের ভেতরে ওঠার এবং হাত ছেড়ে দিয়ে বাঁচার প্রাণপন চেষ্টা করছেন। আর্তনাদ করছেন, কিন্তু কিছুতেই ট্রেনে থাকা ব্যক্তিটি তাকে ছাড়ছেন না। অবশেষে নশরতপুর রেলওয়ে প্লাটফর্মে পৌছার পর ঝুলে থাকা ব্যক্তিটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন ওই ব্যক্তিকে বাঁচাতে এগিয়ে যায়। ৩৫ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে এমনটিই দেখা গেছে। অনেকে ধারণা করেছিলেন ট্রেনে কাটা পড়ে লোকটি হয়তো মারা গিয়েছে। তবে লোকটি মারা যাননি।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার দুপুরে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নশরতপুর রেলওয়ে স্টেশন ওই ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম মতিউর রহমান (৫২)। তিনি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পাড়ইল গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় একজন আদম ব্যবসায়ী। বর্তমানে তাকে বগুড়ার একটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা দিয়ে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

মতিউর রহমানের ছেলে আহসান হাবিব জানান, তার বাবার মাধ্যমে দুই বছর আগে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার তালসন গ্রামের সজীব নামের এক যুবক সৌদি আরবে যান। কিন্তু সৌদি আরবে যাওয়ার পর কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় আকামা (কাজের সুপারিশ সনদ) পাননি। এ নিয়ে সজীবের পরিবারের সঙ্গে মতিউর রহমানের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করেই তার বাবাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

আহসান হাবীব বলেন, ‘গতকাল বাবা বগুড়া থেকে ট্রেনে করে রানীনগরের বাসায় ফিরছিলেন। ট্রেনের বগিতে যখন যাত্রী কমে যায় তখন সাত জন যুবক বাবার কাছে যায়। এ সময় তারা সজীবের আকামা হয়নি কেন জিজ্ঞেস করে। এক পর্যায়ে সুমন নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে সজীবের শ্যালক হিসেবে পরিচয় দেয়। তার পর তারা বাবাকে মোবাইল চোর আখ্যা দিয়ে মারধর করতে থাকে। তার পকেট থেকে ৫০ হাজার টাকাও বের করে নেয়। বগির অন্য যাত্রীরাও বিষয়টি বিশ্বাস করে। তারা চাকুও বের করেছিল তাকে মারার জন্য। এক পর্যায়ে বাবা নিজেকে বাচাতে ট্রেন থেকে লাফ দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ট্রেনের ভেতর থেকে ওই সাত জনের কেউ একজন বাবার হাত ধরে রাখে। পরে নশরতপুর রেলস্টেশনের কাছে পৌঁছলে বাবাকে ছেড়ে দেয়। তখন তিনি ট্রেনের নিচে চলে যান।’

আহসান হাবীব জানান, তার বাবা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন। ঘটনার পর তাকে প্রথমে আদমদদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে বগুড়ার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে আজ তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বাবার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া ছিলে গেছে। বুক ও কোমড়ে আঘাত পেয়েছে। তবে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাটা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও জানান, সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের জিআরপি পুলিশ স্টেশনে মামলা করবেন। সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের জিআরপি পুলিশ স্টেশনের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ভুক্তভোগীর ছেলে আমাদের কাছে অভিযোগ দিতে এসেছেন। তার কাছে মৌখিক বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি আগে তদন্ত করব। এরপর আইনি ব্যবস্থা নেব।’

সারাবাংলা/পিটিএম

চলন্ত ট্রেন পড়ে যাওয়া বেঁচে আছেন ব্যক্তি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর