ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেছেন, আগামীতে যদি অশান্তিপূর্ণ কোনো আন্দোলন করতে হয় তার জন্য দায়ী থাকবে অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা পুরো ঢাকা শহরকে অচল করে দেব। আমরা পুরো বাংলাদেশকেই অচল করে দেব। আমরা টানা সাত দিন শান্তিপূর্ণভাবে একটানা কর্মসূচি পালন করার পর আমরা আমাদের অবস্থান ব্যক্ত করছি।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল ৫টার দিকে রাজধানী শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নেতা সাম্য হত্যার বিচারে গাফিলতির অভিযোগ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সরেজমিনে দেখা যায় দুপুর ৩টা থেকে বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল বন্ধ থকে। মুষলধারে বৃষ্টির মাঝেও ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ‘আমার ভাই কবরে খুনি কেন বাহিরে’, ‘আমার ভাই মরল কেন? প্রশাসন জবাব দে’সহ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
রাকিবুল ইসলাম রাকিব ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আজকে প্রমাণ করেছেন ছাত্রদলের ওপর আঘাত আসলে আপনারা লড়াই সংগ্রাম করে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সাম্য হত্যায় জড়িত যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪ দিন হলো সাম্যের হত্যার। তাদেরকে ৪ দিন পরে কেন রিমান্ডে নেওয়া হল? এই তিনজনই প্রকৃত খুনী? আমরা সন্দেহ পোষণ করছি।’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘সাম্য হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সারা বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গাফলতির জন্য হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতের কারণে মানুষও নিরাপদ বোধ করে না।’
অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা ক্ষমতার মসনদ পাকাপোক্ত করার জন্য কালক্ষেপন করছেন। উপদেষ্টারা সাম্য হত্যার বিষয়ে আমাদের কাছে বা সাম্যর পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ দূরের কথা তারা সাম্যর জানাযাটুকু পড়তে আসেননি। যারা পারভেজ-সাম্য হত্যার বিষয়ে সামান্যতম সহানুভূতি প্রকাশ করে না তাদের প্রতি আমরাও কোন সহানুভূতি প্রকাশ করব না।’
এ সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদেরকে টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজকে হত্যা করা হয়েছে তার কিছুদিন পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এফ রহমান হলের ছাত্রদল নেতা সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্রদলের আর কোনো নেতা-কর্মী দের গায়ে আঘাত করা হলে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলবো।’
নাসির আরও বলেন, ‘গুপ্ত সংগঠনের কিছু নেতা কর্মী সাম্যর নেগেটিভ প্রচারে লিপ্ত হয়েছে। আপনারা সাম্যকে নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সেই বিবৃতি আমরা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করছি। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে খুনী শেখ হাসিনার আমলে যেমন বলা হয়েছে কারো বেডরুম পাহারা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব নয় তেমনি বলা হচ্ছে সাম্য হত্যার ঘটনায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পাহারা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব নয়। এই বক্তব্য ঘৃণা করে প্রত্যাখ্যান করছে।’
এই সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ- পূর্ব-পশ্চিম, ঢাকার বিভিন্ন কলেজ শাখাসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।