Wednesday 21 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাউফলে ইউএনও’র অপসারণের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২১ মে ২০২৫ ১৯:৫৮ | আপডেট: ২২ মে ২০২৫ ০০:১৬

ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

পটুয়াখালী: জেলার বাউফল উপজেলার বির্তকিত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিনুল ইসলামের অপসরণের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে বাউফলের ছাত্র-জনতা। বুধবার (২১ মে) বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ছাত্র-জনতার ব্যানারের অনুষ্ঠিত ওই বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। বিক্ষোভ মিছিলটি বাউফল পাবলিক মাঠ থেকে শুরু হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ চলার সময় অনেক বিক্ষোভকারীকে ঝাড়ু উচিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

বিজ্ঞাপন

মিছিলে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, ‘এক দুই তিন চার আমিনুল বাউফল ছাড়‘, ‘দুর্নীতিবাজ ইউএনও চাই না, চাই না’, ‘সাইকো ইউএনও চাই না চাই না।’ উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে বিক্ষোভকারীরা সমবেত হয়ে বক্তব্য দেন। এ সময় তাকে (আমিনুল ইসলাম) সাইকো ইউএনও হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

বক্তারা বলেন, ‘আমরা এমন একজন ইউএনও চেয়েছিলাম যার দ্বারা আমাদের প্রিয় বাউফলের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে। একটা আদর্শ বাউফল গড়বে। কিন্তু আমরা এমন এক ইউএনও পেলাম যিনি কিনা আসতে না আসতেই বাউফলকে কুলশিত করে ফেলেছে। বাউফলকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে। তার কার্যালয়ে গেলে কোনো মানুষ সন্মান পায় না। ভদ্রতা বোধ বলতে তার মধ্যে কিছুই নাই। দাম্বিকতা নিয়ে চলাচল করেন। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না। অল্পদিনে অবৈধভাবে টাকা বা ঘুষ নিয়ে তিনি ব্যাপকভাবে সমালোচিত। টাকা ছাড়া একটি ফাইলেও সই করেন না।’

বক্তারা আরও বলেন, ‘খবর নিয়ে জেনেছি তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনিতে আলিশান অট্টালিকা তৈরি করে রাজ প্রসাদ গড়েছেন। এসব টাকার উৎস্য কি। তিনি শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন এর ভাগ্নি জামাই। তাকে আমাদের বাউফলে চাই না। এলজিইডির ঠিকাদাররা তাকে মিস্টার দেড় পার্সন্ট বলে সম্মোধন করেন। টিআর কাবিখাসহ সকল প্রকল্প থেকে ৫ শতাংশ টাকা আদায় করেন। সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় প্রত্যেক কেন্দ্র থেকে তিনি সন্মানী ফি এর নামে ৪০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন কমিটিকে চাপ দিয়ে। শুধু পরীক্ষা বণিজ্যে তিনি আয় করেছেন ৬ লাখ টাকা। ঘুষ ছাড়া তার দফতরে কোনো কাজ হয় না।’

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ‘নাসির ও আনিচ নামে তার অফিসে দুইজন স্টাফ রয়েছে তাদের মাধ্যমে টাকার লেনদেন করেন। তার কার্যালয়ে বসার চেয়ারগুলো দেখলে মনে হয় উনি একজন দেশ সেরা সাইকো। পটুয়াখালী জেলার একমাত্র সাংবাদিক কালের কণ্ঠের এমরান হাসান সোহেল যিনি দেশি বিদেশি পুরস্কারে পেয়েছেন সাংবাদিকতায়। যার খ্যাতি রয়েছে দেশ জুড়ে। তার সঙ্গে যে এমন আচরণ করে সে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কেমন করে? এমন অর্থব অর্কমা ইউএনও আমরা আজই অপসরণ চাই। সাংবাদিকতার পাশাপাশি যে মানুষটি অনেক অসহায় শিশুদের নিয়ে কাজ করে ব্যাপক প্রসংশা কুড়িছেন। সম্প্রতি যিনি আয়শা নামের এক গরিব অসহায় শিশুর ব্যয়বহুল চিকিৎসার ফান্ড সংগ্রহ করে চিকিৎসা করিয়েছেন। তার সঙ্গে এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ যেন আমাদের শিশু সমাজকে ব্যঙ্গ করে। যিনি পরিবেশ সমাজ বাঁচাতে সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিরলস কাজ করছেন তার সঙ্গে এ আচরণ যেন আমাদের পুরো সমাজকে ব্যঙ্গ করার শামিল।’

এ সময় মমিন খন্দকার নামের একজন রিকশাচালক অভিযোগ করেন ইউএনও তাকে অন্যায়ভাবে ধরে নিয়ে থাপ্পর মেরেছে।

দুই কর্মদিবসের মধ্যে ইউএনওকে অপসরণ করা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাওয়ারও হুমকি দেওয়া হয় সমাবেশে।

এ সময় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতা শুভ চন্দ্র শীল, আয়শাতুন্নেছা বর্ষা, শাহানা বেগম, সাধারণ শ্রমিক মমিন খন্দকার ও রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৯ মে) বাউফলের ইউএনও ওই উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও কালের কণ্ঠের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহেল এর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এর প্রেক্ষিতে ইউএনও আমিনুলের সকল অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে ফুঁসে ওঠেন বাউফলের ছাত্র-জনতা।

সারাবাংলা/এইচআই

ইউএনও ঝাড়ু মিছিল পটুয়াখালী বাউফল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর