যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রথম ধাপে শিথিলতা এনেছে। শুক্রবার (২৩ মে) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও পররাষ্ট্র দফতর একযোগে সিরিয়ার জন্য বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে সিরিয়ায় নতুন বিনিয়োগ, আর্থিক সেবা প্রদান এবং জ্বালানি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতে কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে ২০১৯ সালের ‘সিজার সিরিয়া সিভিলিয়ান প্রটেকশন অ্যাক্ট’-এ বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছে পররাষ্ট্র দফতর, যাতে সিরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও অংশীদার দেশগুলো মানবিক সহায়তা ও অবকাঠামোগত খাতে অবদান রাখতে পারে।
পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই ছাড় সিরিয়াজুড়ে বিদ্যুৎ, পানি, স্যানিটেশন ও জ্বালানি খাতে সহায়তা এবং আরও কার্যকর মানবিক সাড়া নিশ্চিত করবে।’
গত ১৩ মে, মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এবং বলেন, ‘এটাই তাদের উজ্জ্বল হওয়ার সময়। আমরা সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছি।’
এরপর ট্রাম্প হঠাৎ বৈঠক করেন সিরিয়ার বর্তমান অন্তর্বর্তী নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে, যিনি সদ্য যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষভাবে মনোনীত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। আল-শারার বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস-এর নেতৃত্ব দিয়ে গত বছর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারকে উৎখাত করেন, যা ১৩ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের প্রথম আট বছরে দেশটি প্রায় ৪৪২ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, সিরিয়ার ওপর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে দেশটি শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যেতে পারবে এবং একটি নতুন যুগের সূচনা হবে।
তবে ২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক পাশ হওয়া ‘সিজার অ্যাক্ট’ পুরোপুরি বাতিল করতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন লাগবে। প্রেসিডেন্ট আপাতত সাময়িক ছাড় দিতে পারেন এবং সেটাই করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় ইউনিয়নও একইসঙ্গে সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।