কোচ কার্লো আনচেলত্তির বিদায়ের খবরটা আগেই জেনেছিলেন তারা। তবে লুকা মদ্রিচ গত সপ্তাহেই আকস্মিক বিদায়ের ঘোষণা দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের মনটা আরও ভারী করে দিয়েছিলেন। গত রাতে লা লিগার এই মৌসুমের শেষ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল রিয়াল। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চোখের জলেই আনচেলত্তি ও মদ্রিচকে বিদায় দিল বার্নাব্যুর দর্শক।
২০১২ সালে টটেনহাম ছেড়ে রিয়ালে যোগ দিয়েছিলেন মদ্রিচ। দীর্ঘ ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে রিয়ালের হয়ে সবকিছুই জিতেছেন মদ্রিচ। রিয়ালের জার্সিতে ৫৯১ ম্যাচ খেলে ৬টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ জিতেছেন ২৮টি শিরোপা। ২০১৮ সালে মেসি-রোনালদোকে হারিয়ে জিতেছিলেন ব্যালন ডি অরও।
বার্নাব্যু গত রাতে সেজেছিল দুই কিংবদন্তির বিদায়ে। মদ্রিচ অবশ্য রিয়ালকে এখনই বিদায় বলছেন না। ক্লাব বিশ্বকাপেও রিয়ালের জার্সি গায়ে দেখা যাবে তাকে। তবে চিরচেনা সেই বার্নাব্যুতে শেষবারের মতো খেলতে নেমে আবেগাপ্লুত ছিলেন মদ্রিচ।
বার্নাব্যুর দর্শককে মদ্রিচ বলেন, ‘এই মুহূর্তটা আসুক, আমি কখনো চাইনি। এটা ছিল দীর্ঘ ও বিস্ময়কর যাত্রা। আমি ক্লাব, প্রেসিডেন্ট পেরেজকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি সতীর্থ, কোচদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। সমর্থকদের বিশেষ ধন্যবাদ জানাই, তারা সবসময় আমার পাশে ছিলেন। আমরা একসাথে অনেককিছু জিতেছি। আপনারা যে ভালোবাসা আমাকে দেখিয়েছে, সেটা আমি কখনোই ভুলব না। সমর্থকদের উদ্দেশে বলব- শেষ হয়ে গেছে, এজন্য কস্ট পেয়ো না, এটা হয়েছে বলেই আনন্দ পাও!’
রিয়ালের ১২৩ বছরের ইতিহাসে আনচেলত্তিই সফলতম কোচ। দুই মেয়াদে ক্লাবের হয়ে জিতেছেন ১৫টি শিরোপা। ৩টি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ২টি ক্লাব বিশ্বকাপ, ৩টি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ, ২টি লা লিগা, ২টি কোপা ডেল রে, ২টি স্প্যানিশ সুপার কাপ ও একটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল শিরোপা আছে তার ঝুলিতে।
বিদায়বেলায় চোখ মুছতে মুছতে ৬৫ বছর বয়সী আনচেলত্তি বলেন, ‘আমি গর্বিত এখানে অসাধারণ কিছু সময় কাটাতে পেরে। এখানে যা অর্জন করেছি, যা ভুলবার নয়। অসাধারণ এক ক্লাবকে কোচিং করিয়েছে আমি। এটা আমার পরিবারের মতো। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। রিয়ালকে আমি কখনোই ভুলব না।’
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব বুঝে নেবেন আনচেলত্তি। মদ্রিচ ক্লাব ছেড়ে কোথায় যাবেন সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সৌদি প্রো লিগ অথবা মেজর সকার লিগেই পাড়ি জমাবেন তিনি।