ঢাকা: ট্রেজারগান দেখতে চাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যকে মাদকচক্র ছুরিকাঘাতে হত্যা করে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল ৫টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাবি প্রক্টরের ফোনে রাত ২ টায় আমার ঘুম ভাঙার পর রমনা জোনের ডিসিকে ফোন দিই। এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে আমরা সবসময় তৎপর ছিলাম। কক্সবাজার মুন্সীগঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।’
ডিবি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে সোহরাওয়ার্দীতে বিভিন্ন ধরনের খাবার বিক্রি হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বাহির থেকেও লোকজন আসে। সাম্য ও তার দুই সহপাঠী সেদিন ভেতরে ঢুকতে গেলে তারা মাদক কারবারিদের হাতে ট্রেজারগান দেখতে পায়। ট্রেজারগান ইলেকট্রিক শক। তখন সাম্য কাছে গিয়ে সেটি দেখতে চাইলে এ নিয়ে ধস্তাধস্তি ও ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার হয়। এক পর্যায়ে সাম্যকে তারা স্পর্শকাতর স্থানে ছুরিকাঘাত করে। পরে দ্রুত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: সংগৃহীত
আঘাত পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে কি না? জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আসলে সেনসিটিভ জায়গায় সাম্যকে আঘাত করা হয়েছে। ওখানে আঘাত করলে রক্ত ক্ষরণে ২-৩ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয়।’
এই হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবদিক থেকে বিচার-বিশ্লেষণ ও তদন্ত করছি। এমন কিছু পেলে জানাব।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এখনো আসামিরা রিমান্ডে রয়েছে। আরও তথ্য উদঘাটনে নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।’
এর আগে, গত ১৩ মে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যান তিনি।
এর পর ১৪ মে সাম্যের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।