ঢাকা: দ্বিতীয় দফায় দেশের ৫২ প্রতিষ্ঠানকে মোট ৫ হাজার ৮০০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অনুযায়ী ১০০ থেকে ২০০ টন চাল রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমতির এ মেয়াদ কার্যকর থাকবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। অর্থাৎ এর মধ্যে রফতানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বুধবার (২৮ মে) এ-সংক্রান্ত অনুমোদনপত্র প্রধান আমদানি-রফতানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে সক্ষমতা অনুযায়ী ১০০ থেকে ৫০০ টন করে মোট ১৮ হাজার ১৫০ টন সুগন্ধি চাল রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই অনুমতির মেয়াদ কার্যকর থাকবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
অনুমোদন পত্রে বলা হয়েছে, এসব চাল আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রফতানি করতে হবে। প্রতি কেজি চালের রপ্তানি মূল্য হতে হবে কমপক্ষে ১.৬০ ডলার।
এছাড়া রফতানির জন্য আরও কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- রফতানি নীতি ২০২৪-২৭ এর বিধি-বিধান অনুসরণ করা; অনুমোদিত পরিমাণের অধিক রফতানি করা যাবে না; শুল্ক কর্তৃপক্ষ রফতানিযোগ্য পণ্যের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে; প্রতিটি কনসাইনমেন্ট জাহাজীকরণ শেষে রফতানি সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র রফতানি-২ শাখায় প্রেরণ করা; অনুমতিপত্র কোনোভাবেই হস্তান্তর করা যাবে না এবং রফতানিকারক কোনক্রমেই নিজে রফতানি না করে সাব-কন্ট্রাক্ট দিতে পারবেন না; পরবর্তী আবেদনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী অনুমোদিত পরিমাণ থেকে প্রকৃত রফতানির সকল তথ্য প্রমাণকসহ আবেদন দাখিল করা এবং সরকার প্রয়োজনে যেকোনো সময়ে অনুমতিপত্র বাতিল করতে পারবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রমতে, দেশে সুগন্ধি চালের উৎপাদন বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীরা রপ্তানির সুযোগ চেয়ে আসছিলেন। অনুমোদন না থাকায় সীমান্তবর্তী দেশে সুগন্ধি চাল পাচারের অভিযোগ ছিল। এ প্রেক্ষিতে রফতানি আয়ের উৎস বাড়াতে ও রফতানি বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে সরকার এ অনুমোদন দিয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ১০ লাখ ২৩ হাজার টন সুগন্ধি চাল উৎপাদিত হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই উৎপাদন ছিল ৫ লাখ ৭৯ হাজার টন। অর্থাৎ, গত সাত বছরে উৎপাদন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে সুগন্ধি চালের চাহিদা বাড়ায় কৃষকেরা এর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৩৩ ধরনের সুগন্ধি ধানের চাষ হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে গত জানুয়ারিতে সরকার আবার রপ্তানি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর কয়েকশ’ প্রতিষ্ঠান চাল রফতানির অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে।