ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ভারতের কলকাতা ও দিল্লিতে উপহার হিসেবে আম পাঠানো হতো। এবার সেই উপহারের আম ভারতে যাবে না। এর পরিবর্তে বাংলাদেশের আম বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হবে। মঙ্গলবার (২৮ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সুত্র সারাবাংলাকে এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ থেকে বিখ্যাত আম হাড়িভাঙ্গা, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, হিম সাগর, বারি-৪ এবং গোবিন্দভোগসহ বেশ কয়েকটি জাতের আমের সমন্বয়ে উপহারের খাঁচি করে পাঠানো হতো ভারতের দিল্লি ও কলকাতায়। তবে এবার কোনো আম ভারতে যাচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকেও উপহারের আম না দেওয়ার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে বলে জানা গেছে।
২০২৪ সালের ৪ জুলাই ভারতের কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য উপহারস্বরূপ ৭ কার্টনে ১৪০ কেজি আম পাঠায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ থেকে ভারতগামী আন্তর্জাতিক বাস শ্যামলী পরিবহণের মাধ্যমে কলকাতায় বাংলাদেশি উপদূতাবাসের কনস্যুলারের ঠিকানায় ওই আম পাঠানো হয়।
বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম ও আইসিপি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, ২০২৪ সালের ৪ জুলাই সকালে সাতটি কার্টনে (১৪০ কেজি) আম উপহারস্বরূপ শ্যামলী পরিবহণের মাধ্যমে কলকাতায় পাঠানো হয়। আমগুলো কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশি উপদূতাবাসের কনস্যুলার গ্রহণ করেন। সেখান থেকে কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এ আম উপহার হিসেবে পাঠানো হবে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে কলকাতায় বাংলাদেশি উপদূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা কোনো সরকারি উদ্যোগ নয়। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে উপহার দিতেই এ আম পাঠিয়েছেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১২ জুন ভারতের সেভেন সিস্টার্সখ্যাত ৬ রাজ্যে ২৪০টি কার্টনের মাধ্যমে ১২০০ কেজি আম পাঠান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২২ সালের ১০ জুন শুধু হাঁড়িভাঙ্গা আম পাঠানো হয়। ওই আম পাঠানো হয় স্পেশাল হিসেবে। ২০২১ সালের ৪ জুলাই ভারতে উপহারের আম পাঠানো হয়। ওই বছর ৫ ট্রাক আম যায় ভারতে। ২০২০ সালেও বিপুল পরিমাণে দামি আম পাঠানো হয়েছিল।
সাবেক সরকারের আমলে এত এত আম উপহার দেওয়া হয়েছিল, এবার উপহারের আম না পাঠালে কোন প্রতিক্রিয়া আসবে কি না? জানতে চাইলে ঢাকার এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নীতিগত জায়গায়। পারস্পারিক সম্পর্কের ভিত্তিতে এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে। নীতিগত জায়গাতেই ভারত সম্পর্কের বিষয়ে ভাবছে এবং অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে ব্যবস্থা এবং পালটা ব্যবস্থা নিয়েছে উভয় দেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আম গেলে কী হবে, আর না গেলে কী হবে তা ভাবার সময় বর্তমানে নেই। এমন দিন নেই যে, উপহার দিয়ে খুশি রাখতে হবে পাশ্ববর্তী দেশকে। আগের সরকার অনেক জায়গাতেই কম্প্রোমাইজ করেছে। তবে বর্তমান সরকার সেইসব কম্প্রোমাইজ করছে না এবং করবেও না।’
