Sunday 01 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৪ বছর পর চাকরিতে ফিরছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত ৯৮৮ জন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩১ মে ২০২৫ ১৪:২৮ | আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ১৫:০৮

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা: ১৪ বছর পর, উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাকরিচ্যুত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজে যোগ দিচ্ছেন রোববার (১ জুন)।

শনিবার (৩১ মে) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ। এর আগে শুক্রবার (৩০ মে) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায়, এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, সভায় চাকরিচ্যুত ৯৮৮ জনকেই চাকরিতে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই যার যার পদে ফিরবেন। ১ জুন থেকে তারা কাজে যোগ দেবেন বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০০৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ওই ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ পেয়েছিলেন। এমএলএসএস থেকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার সমমর্যাদার বিভিন্ন পদে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

গত মঙ্গলবার (২৭ মে) ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর জ্যেষ্ঠতার সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরি পুনর্বহালের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এদিন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রায় এ ঘোষণা করেন। রায়ের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী, চাকরিচ্যুত ৯৮৮ জনের মধ্যে যাঁরা জীবিত আছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই চাকরিতে পুনর্বহাল হবেন। চাকরিচ্যুতি থেকে পুনর্বহালের দিন পর্যন্ত, এই সময়টাকে অসাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য হবে। এই সময়ে তাঁরা তাঁদের জ্যেষ্ঠতা পাবেন। অর্থাৎ জ্যেষ্ঠতা ক্ষুন্ন হবে না। চাকরিচ্যুতদের ভোগান্তি ও মানবতার দিক বিবেচনা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের সুবিধাদির বিষয় নির্ধারণ করার জন্য ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’

এ সময়, আপিল বিভাগ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আপিল মঞ্জুর করেছেন জানিয়ে অপর পক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খায়ের এজাজ মাস্উদ বলেন, ‘আপিল বিভাগের দেওয়া (১৯ মে ২০১৬) রায় বাতিল করা হয়েছে। হাইকোর্টের যে রায়ে তাদের (কর্মকর্তা-কর্মচারী) চাকরি গিয়েছিল, সেটিও বাতিল করা হয়েছে। ওই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে বলা হয়েছে।’

এর আগে, গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চাকরিচ্যুত এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবি জানান। এ নিয়ে তারা আন্দোলনেও নামেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেটের সভায় ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতিহিংসার শিকার হয়ে চাকুরিচ্যুত ৯৮৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহালের বিষয়ে রিভিউ পিটিশনের সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিবিধি যথাযথ অনুসরণ করে ২০০৩ ও ২০০৪ সালে বিভিন্ন স্মারকে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর ২০১১ সালে কিছু অসাধু কর্মকতা ও কর্মচারী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভিত্তিহীন অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে আদালতকে বিভ্রান্ত করলে তাদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভায় ২০১১ সালে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়, যা ছিল চাকরিবিধি বহির্ভূত-অনিয়মতান্ত্রিক ও অনৈতিক।

এর আগে, ২০০৪ সালের ৩১ আগস্ট এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ অবৈধ ঘোষণার আবেদন জানিয়ে সাবেক এমপি ফজলে রাব্বী মিয়া হাইকোর্টে রিট করেন। সে সময় দীর্ঘ শুনানির পর ২০০৬ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে দেন। পরে গাজীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আকম মোজাম্মেল হক (ওই রায়ের বিপরীতে) ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর রিভিউ মামলা দায়ের করলে আদালত কর্মচারীদের চাকরি থেকে অপসারণের রায় দেন।

সারাবাংলা/এনএল/এমপি

চাকরি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর