কুমিল্লা: এক কোটি টাকার বিনিময়ে দোসরদের নিয়ে কুমিল্লা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কমিটি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কমিটিতে স্থান পেয়েছেন মাদক ব্যবসায়ী ও আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িতরা। কেন্দ্রীয় কমিটিতে এখনো আওয়ামী দোসররা বসে আছেন। টাকা নিয়ে তারা কমিটি দিয়েছেন।
এসব অভিযোগ এনে শনিবার (৩১ মে) দুপুরে কুমিল্লা সদরের আলেখারচর বিশ্বরোড এলাকার মেডিসিন কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সদ্য ঘোষিত কমিটির সহ-সভাপতি মোরশেদুল হক খোকন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘‘সম্প্রতি আওয়ামী দোসরদের একটি অংশ তাদের অপকর্ম ঢাকতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছেন- কুমিল্লায় দুই ব্যক্তির কাছে ওষুধ ব্যবসায়ীরা জিম্মি। প্রকৃতপক্ষে চিত্রটা ভিন্ন। সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পরিবার। তারা যাচাই-বাছাই করে মামলা দায়ের করেছেন। এতে আমাদের কোনো হাত নেই। তাদের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আওয়ামী দোসররা মেডিসিন ব্যবসায়ী শিল্পী ও রুবেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। প্রকৃতপক্ষে তারাই অবৈধ মেডিসিন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসাও করছেন। বিভিন্ন সময় অবৈধ মেডিসিন ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। মূলত সদ্য ঘোষিত কমিটিতে আটজন আওয়ামী লীগের দোসর রয়েছেন। যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা, সভা-সমাবেশেও উপস্থিত থাকতেন। সাবেক আওয়ামী লীগের এমপিদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের ছবি রয়েছে। সেসব ঢাকতে তারা এখন শিল্পী ও রুবেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। যা নিন্দনীয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’’
তার অভিযোগ, সদ্য ঘোষিত কমিটিতে সভাপতি পদে থাকা মো. আব্দুল আলীম ভূঁইয়ার সঙ্গে কুমিল্লা সদরের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী বাহার ও চান্দিনা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রাণ গোপালের এবং সাবেক কুসিক কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদের সুসম্পর্ক ছিল। সিনিয়র সভাপতি মো. নুরুল আলম চৌধুরীর (নোমান) মা নাজমা আক্তার চান্দিনা উপজেলা পরিষদের মহিলা সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন। সহ-সভাপতি মেসার্স লাবোনি মেডিকেল হলের মালিক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (শাহজাহান) ও সদস্য মেসার্স নাড়িখান মেডিকেল হলের মালিক মো. শামীম আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা ছিলেন। কমিটির সদস্য মেসার্স নিউ গ্রিণ ফার্মেসীর মালিক এনায়েত উল্লাহ মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালিন কমিটিতে সদস্য ছিলেন। সর্বশেষ মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে উপদেষ্টা পদ পান। সদস্য মেসার্স নিউ মেডিকেল হলের মালিক বাবু ধনঞ্জয় কুমার দত্ত ও মেসার্স যমুনা মেডিকেল হলের মালিক নিখীল চন্দ্র দত্ত আওয়ামী সমর্থক ছিলেন। এছাড়াও সদস্য মেসার্স রিয়া মেডিকেল হলের মালিক প্রহল্লাদ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে মেডিসিন ব্যবসায় নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে।
মোরশেদুল হক খোকন বলেন, ‘‘আওয়ামী দোসর, অর্থ যোগানদাতা ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যা নিন্দনীয়। এই ঘটনা ২৪ এর আন্দোলনকে কলঙ্কিত করেছে। আমরা চাই দ্রুত দোসরদের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেডিসিন ব্যবসায়ী আবু বকর সিদ্দিক শিল্পী ও রুবেলসহ আরও অনেকে। কুমিল্লা সাধারণ ওষুধ ব্যবসায়ীদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে মেডিসিন কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
