ঢাকা: রাজধানীতে দুই সিটি করপোরেশন মিলে এবার অনুমোদিত হাট বসেছে অন্তত ৩০টি। এর বাইরে অনুমোদন ছাড়া পাড়া মহল্লায় আরও বেশকিছু পশুর হাট বসছে। এসব হাটে এখনো বেচাকেনা শুরু হয়নি। তবে দুয়েকদিনের মধ্যেই পরিপূর্ণভাবে পশু বিক্রি শুরু হবে বলে ধারণা করছেন বেপারীরা। আর এসব পশুর হাট কেন্দ্রিক পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শনিবার (৩১ মে) হোটেল রেডিসন ব্লুতে বিজিএমইএ’র ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এরকম ছোট ছোট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আগামীতে জাতীয় নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ হয় সেদিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আজ ট্রায়াল যাত্রা শুরু। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যার ভোট তিনিই দেবেন। আগামীতেও তাই হবে।’
পশুর হাট কেন্দ্রিক নিরাপত্তার বিষয়ে কমিশনার বলেন, ‘পশুর হাটগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মানি এস্কটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বেপারী যে হাটে পশু নিতে চায় সেই হাটেই পশুর ট্রাক নিতে সহায়তা করবে ডিএমপি। কেউ বাধা দিতে পারবে না। বাধা দিলে ৯৯৯ এ ফোন করতে বলা হয়েছে।’
ছিনতাইকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঈদে ছিনতাইকারীদের প্রতিহত করা হবে। গত কয়েকদিন আগে বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ভাইরাল হয়েছে। তবে তিন দিন ধরে কোনো ছিনতাই হয়নি। পুলিশ সতর্ক রয়েছে। জনগণকেও এগিয়ে আসতে। সবার সামনে ছিনতাই করে চলে যাচ্ছে, অথচ কেউ কিছু বলছে না। সবাইকে একসঙ্গে এসব অপরাধ প্রতিহত করতে হবে।’
থানা পুলিশের প্রতি কমিশনার বলেন, ‘ঈদে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে সবগুলো থানার ওসিকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। পশুরহাট কেন্দ্রিক নিরাপত্তা বাড়াতে বলা হয়েছে। বেপারীরা পশু বিক্রি করে যাতে কষ্টের অর্থ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য সবরকমের সহযোগিতা দিতে বলা হয়েছে। বেপারী যেখানে থাকবেন, যেখানে খাবেন, তারা যেন সব কাজ ঠিকভাবে করতে পারে- সেজন্য পুলিশকে পেট্টোল বাড়াতে বলা হয়েছে।’
র্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে বলা হয়েছে, রাজধানীতে পশুর হাট কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। টহল টিম বাড়ানো হয়েছে। কোথাও কোথাও অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ঠেকাতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক থাকতেও বলা হয়েছে।
রাজধানীর গাবতলী, ৩০০ ফিট, কালসী, উত্তরা, দক্ষিণ বনশ্রীসহ বেশ কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে গরু উঠতে শুরু করেছে। তবে বেচাবিক্রি এখনো শুরু হয়নি। পুলিশ অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছে। টহল পুলিশ হাঁটাহাঁটি করছে। সাদা পোশাকেও পুলিশকে দেখা গেছে। এছাড়া মানি এস্কট দিতে পুলিশের স্পেশাল ভ্যান দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপ কমিশনার (ডিসি মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘পশুর হাট কেন্দ্রিক যে ধরণের নিরাপত্তা নেওয়া দরকার তার সবই নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো ঘাটতি নেই। পুরো ঢাকা শহরে পুলিশ নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়া সাদা পোশাকের পুলিশও রয়েছে মাঠে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর বাইরেও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো থেকেও সবধরনের তদারকি করা হচ্ছে। কোথাও কোনো আগাম তথ্য থাকলে তা সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। অনেক ঘটনা আছে, যা সবার অগোচরে করা হচ্ছে। যেগুলো ঘটনা সংঘটিত হওয়ার আগেই নিবৃত করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, এবারের ঈদ ভালোভাবেই উযযাপিত হবে।’