ঢাকা: ঢাকার বায়ু মান আবারও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির সংকেত দিচ্ছে। রোববার (১ জুন) সকাল ৯টার দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) রেকর্ড করা হয়েছে ৯০, যা ‘মধ্যম’ (Moderate) পর্যায়ে পড়ে। যদিও এ মান সাধারণ মানুষের জন্য তুলনামূলকভাবে গ্রহণযোগ্য, তবে শিশুরা, বয়স্করা এবং শ্বাসকষ্টে ভোগা নাগরিকদের জন্য তা ক্ষতিকর হতে পারে।
বিশ্বের বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ার (IQAir)-এর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় মূল দূষণকারী উপাদান হিসেবে আছে PM2.5, যার ঘনত্ব আজ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৩০ মাইক্রোগ্রাম। এই মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্ধারিত নিরাপদ মানের ছয় গুণেরও বেশি।
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় আজকের দিনে শীর্ষে রয়েছে—
কিনশাসা, কঙ্গো – AQI ১৫৮
সান্তিয়াগো, চিলি – AQI ১৫৭
মেদান, ইন্দোনেশিয়া – AQI ১২৯
দিল্লি, ভারত – AQI ১২১
সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া – AQI ১১৯
এ তালিকায় ঢাকার অবস্থান ১৪তম, যা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর তুলনায় কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো শঙ্কাজনক অবস্থানেই রয়েছে।
ঢাকার বায়ুমণ্ডলের চিত্র:
ঢাকা মহানগরীর বায়ু দূষণের মূল উৎস হিসেবে ধরা হচ্ছে যানবাহনের কালো ধোঁয়া, ইটভাটা, নির্মাণকাজ এবং সড়কের ধুলাবালি। গ্রীষ্মকালীন খরার সময়ে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় ধুলিকণা বাতাসে বেশি ভাসে, যা সরাসরি শ্বাসতন্ত্রে প্রভাব ফেলে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের হাঁপানি বা ব্রঙ্কাইটিস রয়েছে, তাদের মাস্ক ব্যবহার করা উচিত এবং সকাল-বিকেলের সময় বাহিরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়িতে বায়ু বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র ব্যবহার ও পর্যাপ্ত পানি পান করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
নাগরিকদের করণীয়:
- বাইরের কাজ যতটা সম্ভব সীমিত রাখা
- এন৯৫ বা সমমানের মাস্ক ব্যবহার
- শিশু ও প্রবীণদের বাইরে যাওয়া সীমিত করা
- নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া
- ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদে এই সমস্যা মোকাবিলায় সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ জরুরি। ঢাকাকে বাসযোগ্য রাখতে চাইলে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা।