ঢাকা: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে অবশেষে নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রোববার (১ জুন) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যদের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। তবে জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা নিয়ে কোনো আদেশ দেননি আদালত।
আদালতে জামায়াতের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন ও ব্যরিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে আজ নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা মামলার মাধ্যমে দলটির নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছিল। এ রায়ের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক সংসদপ্রাপ্তি নিশ্চিত হলো। এ রায়ের পর বাংলাদেশে সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রাণবন্ত সংসদ গঠিত হবে বলে আমরা আশাবাদী।
এছাড়া জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে সবাই নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বেছে নেবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন এই আইনজীবী।
এর আগে, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের বাতিল হওয়া প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিলের রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। গত ১৪ মে চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ওই দিন জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
চলতি বছরের ১২ মার্চ রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল শুনানি শুরু হয়।
গত বছরের ২২ অক্টোবর নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ফলে নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে পেতে ফের আইনি লড়াই শুরু করে জামায়াত।
এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিলে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তীতে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় গত বছরের নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজের আদেশ দেন। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল থাকে।