বরিশাল: বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ ২৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ এবং ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) মধ্যরাতে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় এ মামলা করেন মহানগর গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম সাগর।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, হামলার অভিযোগে দায়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।
এজাহারে বলা হয়, শনিবার (৩১ মে) বিকেলে নগরীর সদর রোডের ফকির বাড়ি রোডে অবস্থানকালে জাতীয় পার্টির একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিল থেকে সরকারবিরোধী ও গণঅধিকার পরিষদের বিরুদ্ধে কটূক্তিমূলক স্লোগান দেওয়া হয়। এ সময় তাদের আপত্তিকর স্লোগান বন্ধ করতে অনুরোধ করা হলে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কিছু নেতাকর্মী লোহার রড, বাঁশ, ও ইট নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত হন বরিশাল জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি এইচএম শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচএম হাসান, মহানগর সম্পাদক ফরহাদ হোসেন তালুকদার ফয়সাল, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মিরাজুল ইসলামসহ ১৫-২০ জন নেতাকর্মী। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও আহতদের উদ্ধার করে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করে।
মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম সাগর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টি আমাদের নিরীহ নিরস্ত্র নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। বাংলাদেশে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করার অধিকার নেই। পুলিশ আমাদের মামলা গ্রহণ করেছে। আমরা চাই, অনতিবিলম্বে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করবে পুলিশ।’
মামলায় আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, জিএম কাদের, মজিবুল হক চুন্নু, সাইদুল ইসলাম ট্যাপা, রুহুল আমিন হাওলাদার, রত্না আমিন, হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম মাহমুদ, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, গোলাম কিবরিয়া টিপু, সেলিম ওসমান, আশরাফুজ্জামান আশু, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, এমএ জলিল, মহাসিনুল ইসলাম হাবুল, মো. জুম্মান, অ্যাডভোকেট এস হাওলাদার, মুফতি আল মাহিস ও মাহমুদ সোহেল। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এরআগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভের অংশ হিসেবে শনিবার বিকেলে ফকির বাড়ি রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ বের করেন জাতীয় পার্টির নেতারা। ওই মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফকির বাড়ি রোডের জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর চালানো হয়।
বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিনুল ইসলাম হাবুল বলেন, ‘বিকেলে আমাদের মিছিলে বিনা কারণে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। যারা হামলা চালিয়েছে আমরা তাদের চিনি না। জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের নেতারা আমাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।’