ঢাকা: সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করে অস্পষ্টতা দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
রোববার (১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘‘অভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া রাষ্ট্রসংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আগামীকাল যে বৈঠক আয়োজন করেছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈঠকে সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি, সংস্কারের রোডম্যাপ এবং সংস্কারের কাজে কোনো ধরনের জটিলতা থাকলে সেগুলো কী এবং কীভাবে সেগুলো সমাধান করা যায়, তা নিয়ে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে সংস্কার নিয়ে অস্পষ্টতা দূর করতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার কেবলই নির্বাচন আয়োজনের জন্য অতীতের তত্ত্ববধায়ক সরকারের মতো কোনো সরকার না। বরং হাজারো মানুষের রক্তের ওপরে গঠিত একটি সরকার। যাদের প্রধান কাজ রাষ্ট্রের আমূল সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে ভবিতব্য সকল স্বৈরাচারের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়া। সরকার গঠনের পরে প্রায় দশ মাস হতে চলল। সংস্কার নিয়ে কাজ হয়েছে ঠিক, কিন্তু দৃশ্যমান, সুসংহত ও জোড়াল কোনো সংস্কার চোখে পড়ছে না। অথচ এই সংস্কারের ওপরেই আগামীর বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে।’’
সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘‘দেশে নির্বাচন নিয়ে কথা উঠছে। অথচ নির্বাচন পদ্ধতি, সংসদীয় আসন সংখ্যা, সংসদের কক্ষ সংখ্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয়ে কোনো ঐকমত্যে পৌছা যায় নাই। নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে আগের ধারায় ও আইনে। সব মিলিয়ে সংস্কারের মতো মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এক ধরনের অস্পষ্টতা ও হতাশা তৈরি হয়েছে। আমি আশা করব, আগামীকালের বৈঠকে সংস্কার নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগীতামূলক চরিত্রের বদলে পরস্পরবিরোধী চরিত্রে গড়ে উঠেছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দীর্ঘ সময় একক লক্ষ্যে একমত থেকে পথচলা দুস্কর। তারই প্রতিফলন আমরা রাজনীতিতে দেখছি। বিগত বছরগুলোতে এবং বিশেষ করে জুলাইতে ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে যেভাবে ঐক্যমত তৈরি হয়েছিল, তা দ্রুততার সঙ্গে ভিন্নমত ও ক্ষেত্রবিশেষ বিরোধীমত তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতি সামনে আরও অবনতি হওয়ার সম্ভবনা প্রবল। তাই রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক কাজে দেরি হলে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সংস্কারকে দুরহ করে তুলবে বলে আশঙ্কা। তাই দ্রুততার সঙ্গে সংস্কারের কাজ আঞ্জাম দিতে হবে। সে জন্য আগামীকালের বৈঠকে জাতীকে সংস্কার নিয়ে একটি পরিস্কার ও দ্বিধামুক্ত দিশা দিতেই হবে।’’