Wednesday 04 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাশিয়ার ইউক্রেনের হামলার পরেও ২ দেশের শান্তি আলোচনা বহাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২ জুন ২০২৫ ১৪:০৬ | আপডেট: ২ জুন ২০২৫ ১৬:৩৯

কোলাজ ছবি: সারাবাংলা

রাশিয়ার চারটি সামরিক ঘাঁটিতে রোববার (১ জুন) ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা (এসবিইউ) ড্রোন হামলা চালানোর পরেও ইস্তানবুলে শান্তি আলোচনায় প্রস্তুত দুই দেশ।

ইউরোপের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় সংঘাত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তিন বছর পর উভয় দেশের কর্মকর্তারা সোমবার (২ জুন) ইস্তানবুলে এক নতুন শান্তি আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে রাশিয়া ও ইউক্রেন প্রথমবারের মতো সরাসরি শান্তি আলোচনায় অংশ নিচ্ছে, যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি হয়নি।

আলোচনার স্থান হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে বসফরাসের তীরে অবস্থিত ওসমানীয় আমলের চিরাগান প্যালেস নামের পাঁচ তারকা হোটেল। আলোচনার সূচনা হবে স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় (১০০০ জিএমটি)।

বিজ্ঞাপন

এর আগের মাসে অনুষ্ঠিত প্রথম দফা আলোচনায় বড় আকারের বন্দি বিনিময়ে সম্মতি জানায় উভয় পক্ষ এবং শান্তিচুক্তির সম্ভাব্য রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন ভ্লাদিমির মেদিনস্কি, যিনি ২০২২ সালে ব্যর্থ আলোচনাগুলোরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং ইউক্রেন আক্রমণের পক্ষে স্কুল পাঠ্যবই লিখে সমালোচিত হয়েছেন। ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ, যিনি দক্ষ কিন্তু বিতর্কিত এক আলোচক হিসেবে পরিচিত।

জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের কূটনৈতিক উপদেষ্টারা ইউক্রেনের আলোচক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে উপস্থিত থাকবেন বলে রোববার (১ জুন) জার্মান সরকারের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে, আলোচনার আগেই ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার ভেতরে হাজার কিলোমিটার দূরের বিমান ঘাঁটিতে চালানো এক পরিকল্পিত অভিযানে প্রায় ৪০টি কৌশলগত বোমারু বিমান ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার।

এ হামলার পেছনে ১৮ মাসের পরিকল্পনা এবং রাশিয়ার ভেতরে ড্রোন পাচার করে কাছাকাছি থেকে চালানোর কৌশল ছিল বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা।

তবে যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার অগ্রগতি থেমে নেই। উত্তর-পূর্ব সুমি অঞ্চলে বাফার জোন গঠনের আদেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খারকিভে সোমবার (২ জুন) রুশ ব্যালিস্টিক হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন সাত বছর বয়সী শিশু রয়েছে।

শান্তি আলোচনার প্রাক্কালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, তাদের প্রধান তিনটি দাবি— পূর্ণ ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতি, বন্দিদের মুক্তি এবং অপহৃত শিশুদের ফেরত।

রাশিয়া দাবি করছে, তারা সংঘাতের মূল কারণ সমাধান করতে চায়, যার মধ্যে রয়েছে- ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সীমিত করা, ন্যাটোতে যোগদান বন্ধ করা এবং বড় ধরনের অঞ্চল হস্তান্তর। ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা এসব দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং রাশিয়ার হামলাকে ঔপনিবেশিক আগ্রাসন বলেই অভিহিত করেছে।

বর্তমানে ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কিয়েভ বলছে, কূটনৈতিকভাবে কিছু অংশ ফিরিয়ে আনাই আপাতত বাস্তবসম্মত পথ। তবে তারা চায়- পশ্চিমা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, যেমন ন্যাটোর সুরক্ষা বা পশ্চিমা বাহিনীর উপস্থিতি, যা রাশিয়া সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে- যুদ্ধ থামাতে হলে ইউক্রেনকে পশ্চিমা সামরিক সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে এবং কিছু অঞ্চল ছাড় দিতে হবে।

সারাবাংলা/এনজে

ইউক্রেন রাশিয়া শান্তি আলোচনা হামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর