শরীয়তপুর: শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে ফের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদলের অপর একটি অংশ। এসময় জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক এবং ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ভিপি রুহুল আমিন মুন্সীর ওপর হামলা চালানো হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে তৃতীয় দিনের মতো শহরের প্রধান সড়কের চৌরঙ্গী মোড়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে পদ প্রত্যাশি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
চার বছর পর গত মঙ্গলবার (৩ জুন) শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাছির এই কমিটি অনুমোদন দেন। এতে এইচ এম জাকিরকে আহ্বায়ক এবং সোহেল তালুকদারকে সদস্য সচিব করে জেলা কমিটি করা হয়। এছাড়াও, কমিটিতে ১৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও ১৭ জনকে সদস্য করা হয়।
কমিটি গঠনের পর ছাত্রদলের অপর একটি অংশ নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ শুরু করে। এই নিয়ে মঙ্গলবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন। পরের দিন বুধবার একই দাবিতে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কে বিক্ষোভ করে জেলা ছাত্রদলের একাংশ।
বৃহস্পতিবারেও বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে তারা। এসময় শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সামনের সড়ক দিয়ে স্ত্রীসহ মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার সময় জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ভিপি রুহুল আমিন মুন্সির ওপর হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এসময় তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
হামলার শিকার বিএনপি নেতা রুহুল আমিন মুন্সির স্ত্রী অ্যাভোকেট মুনিরা আক্তার বলেন, আমার স্বামী রুহুল আমিন মুন্সি আমাকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা আমার স্বামীর ওপর হামলা চালায়। মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছি। আমি এর বিচার চাই। আমরা আইনি পদক্ষেপ নিবো।
জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহেল তালুকদার বলেন, যারা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতির ওপর হামলা করতে পারে, তারা ছাত্রদলের কেউ হতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার এ কে এম নাসির উদ্দীন কালু বলেন, ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে একটি অংশ বিক্ষোভ করে আসছে। আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু যারা সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে তারা ঠিক করছেনা। যারা ফৌজদারি অপরাধ করছে তাদের বিচার হওয়া উচিত।
রুহুল আমিন মুন্সীর ওপর হামলার বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বারবার চেষ্টা করেও বিক্ষোভকারীদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
পালং মডেল থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, ছাত্রদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ আজও শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। এসময় বিএনপি নেতা রুহুল আমিন মুন্সির ওপর হামলার খবর পেয়েছি। হামলার ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
