ভারতের আহমেদাবাদে সর্দার বল্লভভাই পাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর একটি এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়েছে। লন্ডনগামী ফ্লাইটটিতে ২৪২ জন আরোহী নিয়ে উড্ডয়ন করেছিল। এর মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দুপুরের দিকে লন্ডনগামী ফ্লাইটটি উড্ডয়নের সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে গুজরাটের বি.জে. মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের ওপর পড়ে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনাকে ‘অবর্ণনীয় হৃদয়বিদারক’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আহমেদাবাদের এই দুর্ঘটনা আমাদের হতবাক ও দুঃখিত করেছে। এটি এমন হৃদয়বিদারক যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, বিমানটি হঠাৎ করেই নেমে যাওয়ার সময় প্রায় ৮২৫ ফুট উপরে উঠে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন-ভারতে ২৪২ যাত্রী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত
এদিকে এয়ার ইন্ডিয়া একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেছে, ‘আমরা বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছি এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আরও তথ্য জানাবো।’
বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটিতে ২৪২ জন যাত্রী এবং ক্রু সদস্য ছিলেন। এর মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ১ জন কানাডিয়ান এবং ৭ জন পর্তুগিজ নাগরিক ছিলেন। ওই যাত্রীদের মধ্যে গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানিও ছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার উপরে ধূসর ধোঁয়ার ঘন স্তম্ভ উঠে আসছে। জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুই ডজনেরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বেশ কয়েকজন আহত যাত্রীকে এরই মধ্যেই নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনাস্থলে চিকিৎসা ও অগ্নিনির্বাপক উদ্ধারকারী দল সক্রিয় রয়েছে।
জরুরি পরিষেবাগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রবেশের জন্য কর্মকর্তারা বিমানবন্দর এবং আশেপাশের দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথগুলি বন্ধ করে দিয়েছেন। ঘটনাস্থলের চারপাশে যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্র্যাফিক ডাইভারশন স্থাপন করা হয়েছে।
লন্ডন গ্যাটউইক বিমানবন্দর এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করা বিধ্বস্ত বিমানটি লন্ডন গ্যাটউইকে সন্ধ্যা ৬টা ২৫মিনিটে অবতরণের কথা ছিল।’
বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু ঘটনার পরপরই এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমি হতবাক ও মর্মাহত। আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং সমস্ত বিমান ও জরুরি প্রতিক্রিয়া সংস্থাগুলিকে দ্রুত এবং সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। উদ্ধারকারী দলগুলোকে একত্রিত করা হয়েছে, এবং ঘটনাস্থলে চিকিৎসা সহায়তা এবং ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’