ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় কোটি টাকার ওপর ছিনতাইয়ের ঘটনায় টাকা বহনকারী চারজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। একইসঙ্গে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের নম্বার ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করছে পুলিশ।
শনিবার (১৪ জুন) সকালের দিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিকেল পৌঁনে ৪টা পর্যন্ত কোনো মামলা না হলেও পুলিশের সন্দেহের তীর নগদ ডিস্ট্রিবিউটরের দিকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, নগদের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়নের বাসা উত্তরা-১৩ সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৩৭ বাসার তিন তলায় বসবাস করেন। সেখান থেকে হেঁটে পাঁচ মিনিট দূরত্বেই নগদের ডিস্ট্রিবিউটিং অফিস। নয়নের বাসায় ছিল টাকাগুলো।
সেখান থেকে শনিবার নগদের ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের চারজন মোটরসাইকেলযোগে ওই টাকা আনছিলেন। মোড়েই একটি হায়েস গাড়ি নিয়ে ওঁৎ পেতে ছিল ছিনতাইকারীরা। র্যাব সদস্য পরিচয়ে ও র্যাবের কটি পরিহিত কয়েকজন তাদেরকে অস্ত্রের মুখে আটকায়। চারজনের মধ্যে কাউসার, লিয়াকত ও আব্দুর রহমান নামে তিনজনকে পিস্তল দেখিয়ে জিম্মি করে টাকার ব্যাগসহ হায়েস গাড়িতে ওঠানো হয়। বাকিজন ওমর হোসেন লাখের বেশি টাকার আরেকটি ব্যাগসহ দৌড়ে পালাতে সক্ষম হয়। এরপর ছিনতাইকারীরা নগদের প্রতিনিধিদের উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে ফেলে রেখে চলে যায়।
ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষ চারজনকে থানা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ছিনতাই হওয়া টাকার পরিমাণ সম্পর্কে তারা জানিয়েছেন, দুটি মোটরসাইকেলে করে টাকা আনা হচ্ছিল। এক মোটরসাইকেলে ছিল এক কোটি আট লাখ ৪২ হাজার। ওমর হোসেন জানিয়েছেন, যে তিনি যে ব্যাগ নিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন তাতে এক লাখের কিছু বেশি টাকা ছিল।
আরও পড়ুন: উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে নগদ এজেন্টের টাকা ছিনতাই
জিজ্ঞাসাবাদে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত তিনজন জানিয়েছেন, তাদের চড় থাপ্পর মারা হয়েছে। কিন্তু কেন নগদের ডিস্ট্রিবিউটর নয়নের বাসায় টাকাগুলো রাখা হয়েছিল? বন্ধের দিনে এতো সকালে এতোগুলা টাকা কেনো বাসা থেকে অফিসে নেওয়া হচ্ছিল। তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করে আলাদাভাবে টাকা বহন করা হচ্ছিল জানালেও একটি মোটরসাইকেলে ছিল এক কোটি আট লাখ টাকা, সেটাই টার্গেট করাটা সন্দেহজনক।
ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক সময় ভেতরেই ইনফর্মার থাকে। আমরা এখনো জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি। তবে ক্লু পেতে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’
ডিসি আরও বলেন, ‘নগদের ওই ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের পার্টনার দুইজন। একজন আব্দুল খালেক নয়ন। টাকাটা তার বাসায় রাখা ছিল। আরেক পার্টনার তারিকুজ্জামান। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তিনি ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে এখনো ঢাকা ফেরেননি। আমরা নয়নকে থানায় ডেকেছি। আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। তারা কাউকে সন্দেহ করছেন কিনা! আমরাও আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিগত সহায়তায় জড়িত ছিনতাইকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে চেষ্টা করছি।’