ঢাকা: দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ব্যবসা-বাণিজ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশিষ্ট উদ্যোক্তা ও ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ শামীম। দেশের প্রায় সাড়ে চার কোটি ব্যবসায়ীদের উন্নয়নে শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের ব্যবসায়ীদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান তিনি। আর সেই পথে এআই প্রযুক্তিকে প্রাধান্য দেওয়ার লক্ষ্য তার।
রোববার (১৫ জুন) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সাকিফ শামীম বলেন, ‘বিশ্ব আজ এআই প্রযুক্তির অভাবনীয় অগ্রগতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ প্রযুক্তি দক্ষতা উৎপাদনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তি বাড়িয়ে ব্যবসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিতে এই সুযোগ কাজে লাগানো সময়ের দাবি।’
তরুণ এই উদ্যোক্তা মনে করেন দেশের প্রায় সাড়ে চার কোটি বাবসায়ী অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ব্যবসার উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাই দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-কে এই পরিবর্তনের নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করে সাকিফ শামীম বলেন, ‘জেনারেল বডির (জিবি) সদস্যদের সমর্থনে নির্বাচিত হতে পারলে আমি ব্যবসায়ীদের আধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য কার্যকর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করবো। বিশেষভাবে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য নিয়মিত এআই প্রশিক্ষণ চালু করা হবে।’
দেশের অর্থনীতির কান্ডারি এই সাড়ে চার কোটি ব্যবসায়ীদের সুস্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন সাকিফ শামীম। এরই ধারাবাহিকতায় এফবিসিসিআইয়ের সদস্য এবং তাদের পরিবারের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে একটি নিজস্ব ক্লিনিক ও হাসপাতাল স্থাপন করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। এই উদ্যোগটি সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি আরও সহজ করবে বলে আশা করা যচ্ছে। সাকিফ শামীম আরও জানান, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি তথা এসএমই উদ্যোক্তারা নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, বিশেষ করে ব্যাংক ঋণ ও উচ্চ সুদের কারণে।
এ বিষয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তি সহজ করা সুদের হার কমানো এবং প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা নিশ্চিত করাই হবে আমার অন্যতম অগ্রাধিকার। এছাড়া সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে একটি বিজয় ক্লিনিক ও হাসপাতাল স্থাপন করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। এই উদ্যোগটি সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি আরও সহজে করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যখাতে প্রযুক্তির ব্যবহারকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন সাকিফ শামীম। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশের অন্যতম আধুনিক হাসপাতাল ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার, যা আন্তর্জাতিক লিড গোল্ড সনদপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। তার উদ্ভাবনী উদ্যোগ ‘লাইফপ্লাস বাংলাদেশ’ একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা অ্যাপ, যার মাধ্যমে ঘরে বসেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং, ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ, হোম ডায়াগনস্টিক, অনলাইনে ডায়াগনস্টিক রিপোর্ট প্রাপ্তি ওষুষ সরবরাহ, ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স ও হোম নার্সিং কেয়ার সার্ভিস এবং মেডিকেল সামগ্রী কেনার মত অনেক সুবিধা। সাকিফ শামীমের এই দূরদর্শী আহ্বান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এআই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং এফবিসিসিআই-এর মতো শীর্ষস্থানীয় সংগঠনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে এবং বাবসায়ীরা বিশ্বমঞ্চে প্রতিযোগিতায়, আরও সক্ষম হয়ে উঠবে। এই ডিজিটাল বিপ্লবের মাধ্যমে একটি স্মার্ট ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন।