ঢাকা: ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম পুনরায় চালু করায় অস্ট্রেলিয়ার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নবনিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইল এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে সে দেশের সরকারের প্রতি তিনি এ ধন্যবাদ জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।।
‘ভিসা আবেদন এখন অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে’ জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার বলেন, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় ৬৫ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করেন এবং আরও ১৪ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন।
বৈঠকে তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা, নির্বাচনী প্রস্তুতি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেন।
সাক্ষাতে অধ্যাপক ইউনূস তার সরকারের সংস্কার উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, বিশৃঙ্খল সময়ের পর আমরা ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য সাংবিধানিক, বিচার বিভাগীয় এবং প্রশাসনিক সংস্কারের উপর রয়ে গেছে – এগুলি একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলার ভিত্তি। আমরা একটি মসৃণ উত্তরণ নিশ্চিত করার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এবং আগামী মাসে আমরা ঐতিহাসিক জুলাই বিদ্রোহের বার্ষিকীতে জুলাই সনদ চালু করব। এছাড়া আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে প্রথমবারের মতো, জনগণ, বিশেষ করে প্রথমবারের মতো ভোটাররা, স্বাধীনভাবে তাদের ভোটদানের সুযোগ পাবে। আমি বিশ্বাস করি এটি একটি উৎসবমুখর এবং আশাব্যঞ্জক উপলক্ষ হবে।’
নির্বাচনী সহায়তা সম্পর্কে সুসান রাইল জানান যে, ‘অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক, প্রযুক্তিগত এবং পরিচালনাগত ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করার জন্য ইউএনডিপির মাধ্যমে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার প্রদান করবে।’
বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে সুসান রাইল বলেন, ‘আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য গত পাঁচ বছরে গড়ে ১৬.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।’
হাই কমিশনার রাইল অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং প্রবাসীদের অবদানের কথাও তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস ৩ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি প্রাক্তন ছাত্রের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, যারা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন।’
জবাবে, অধ্যাপক ইউনূস অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদত্ত বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উৎসাহিত করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে, অধ্যাপক ইউনূস অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশে বসবাসকারী দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা বাড়নোর আহ্বান জানান।