ঢাকা: ‘নারীদের সংরক্ষিত আসন ১০০ করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্মমহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) জাতীয় ঐকমত্য কশিমনের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় দিনের আলোচনার পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘‘সংসদে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য কমিশন চাপাচাপি করছে। অথচ জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে এটা অপ্রাসঙ্গিক। জুলাই অভ্যুত্থানের দাবি হল, দেশকে ভবিষ্যৎ স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করা। বাংলাদেশে নারীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা আছে। বাংলাদেশের ৩০০ আসনেই নারীদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ আছে। আমাদের নারীরা উন্মুক্ত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মূলধারার রাজনীতি করে আসছেন। বিশ্বের ইতিহাসে বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে রাষ্ট্র হিসেবে নারীকে প্রধান করে পরিচালিত হয়েছে।’’
‘‘হ্যাঁ, সামাজিক কিছু বাস্তবতা আছে। সেটা আমাদের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কারণে আমাদের নারীরা পুরুষের সমান্তরালে রাজপথের আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাজনীতিতে সক্রিয় হন না। এখন সংসদে আরও ৫০টা আসন বৃদ্ধি করলেই যে এই অবস্থার বড় পরিবর্তন হয়ে যাবে, তা সত্য না এবং নারীর জন্য আসন সংরক্ষণ করার চেয়ে তারা ৩০০ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক, প্রার্থী বাছাইয়ে অংশ নিক এবং রাজনৈতিক দল পরিচালনা করুক। তাতেই তাদের সন্মান বৃদ্ধি পাবে। কারণ, সংরক্ষণের ধারণাই নারীর জন্য অবমাননাকর’’— বলেন গাজী আতাউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার একটা বিষয় আছে তাই যদি সব দল একমত হয় তাহলে নারীর জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণ করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুল দাবি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দেওয়া হোক, তাহলে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নারীদের আসন ঠিক করা হবে। এটা কমিশনের বিকল্প প্রস্তাবের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভোটের সংখ্যানুপাতিক হারে দলগুলোর জন্য নারী আসন বরাদ্দ করা যেতে পারে। যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে সেই দল থেকে ততজন নারী সংসদ সদস্য হবেন।’’
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল ও আস্থা ভোট ব্যতিত বাকি সকল ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যগণ স্বাধীন মতামত প্রদান করার ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন সমর্থন করেছে এবং এর ওপরে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এছাড়াও সংসদীয় কমিটির ক্ষেত্রে পাবলিক একাউন্স কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, এস্টিমেশন কমিটি ও পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটির প্রধান এবং অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ কমিটির প্রধান আনুপাতিক হারে বিরোধী দল থেকে নেওয়ার বিষয়েও ইসলামী আন্দোলন সমর্থন করেছে।’’