চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের মীরসরাই ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতকে দেওয়া ৯৯০ একর জমির বরাদ্দ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ‘সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ‘ নামে একটি সংগঠন।
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে সংগঠনটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক নাগরিক সভায় এ দাবি জানানো হয়। এতে রাজনীতিক-সংগঠকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নগর জামায়াতের সাবেক আমীর শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ইতিহাস ভুলে যাওয়া জাতি। পলাশী যুদ্ধের ইতিহাস, ফকির বিদ্রোহ, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার ইতিহাস, ফরায়েজী আন্দোলনের ইতিহাস আমরা ভুলে গেছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি সংকটময় অবস্থা বিরাজ করছে। পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করছে। মুক্তিপণ আদায় করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সংকট সমাধানে লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের কল্যাণে নাগরিক সভার এই আলোচনা রাজপথে নিয়ে যেতে হবে। সুশীল সমাজের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তরুণদের কাছে নিয়ে যেতে হবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মজিবুর রহমান বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে জেএসএস ও ইউপিডিএফের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। সংগঠনগুলো পাহাড়ে নিরীহ বাঙালি ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টা করছে। গোপন বৈঠক, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং সশস্ত্র মহড়ার মাধ্যমে এলাকায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করছে। নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। আদিবাসী আধিপত্য প্রতিষ্ঠার নামে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে।’
সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ’র প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা আল ইহযায বলেন, ‘চট্টগ্রামের মীরসরাই এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতকে প্রায় ৯৯০ একর জমি বরাদ্দ দেয় আওয়ামী সরকার, যা বাংলাদেশের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ। ভারতের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত পরিকল্পনার অংশই ছিল বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিক স্থানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। বিশেষত, ফেনী থেকে মীরসরাই পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার প্রতি ভারতের গভীর নজর রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার। অথচ ভারতকে দেওয়া মিরসরাইয়ের ৯০০ একর ভূমির এই জোনটি বাতিল করা হয়নি। ভারতকে দেওয়া এই ভূমির বরাদ্দ বাতিল করতে হবে।’
সংগঠনটির উপদেষ্টা পারভেজ তালুকদারের সভাপতিত্বে ও এম শাজাহান সাজুর সঞ্চালনায় সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, খেলাফত মজলিসের মহানগর কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ এমদাদুল্লাহ সোহায়েল, গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী ফাহিম শরিফ খান বক্তব্য দেন।
