চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা দুই মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এসময় ফজলে করিম নিজেকে রাউজানের সংসদ সদস্য উল্লেখ করে শহরের কোনো ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা নেই বলে আদালতের কাছে দাবি করেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদের আদালতে পুলিশের দুটি আলাদা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগেরদিন গত বছরের ৪ আগস্ট নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় কোতোয়ালী ও সদরঘাট থানার মামলা দুটি দায়ের হয়েছিল। দুই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত কারাগারে থাকা এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে শ্যোন অ্যারেস্টের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুনানির সময় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত করা হয়। এসময় আদালতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমি রাউজানের সংসদ সদস্য। মেট্রোপলিটন এরিয়ার কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতে পালানোর পথে ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তের আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আওয়ামী লীগের আমলের পুরো সময় তিনি বিরোধী মতের মানুষসহ পুরো রাউজানবাসীর কাছে ছিলেন ‘মূর্তিমান আতঙ্ক’। ব্যাপক ক্ষমতাধর ফজলে করিমের গুম-খুন, বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নিজ দলের বিরুদ্ধ মতের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা, নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলে এলাকায় রাজত্ব কায়েম করা, সরকারি জায়গা দখলসহ বিস্তর অভিযোগ আছে। তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি মামলা হয়েছে।
এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ১৯৯৬ সালের আগে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সেবছর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে মনোনয়ন পান। কিন্তু জিততে পারেননি। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন তিনি। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালেও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হয়েছেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।