Thursday 19 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাহসিকতা ও অবদানের স্বীকৃতি পেলেন রেলের তিন কর্মী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ জুন ২০২৫ ২০:০১ | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫ ২১:৩৪

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রেলের তিন কর্মীর হাতে নগদ অর্থসহ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন

ঢাকা: দেশের রেলওয়ে সেবা ও সুরক্ষায় আত্মনিবেদন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার স্বীকৃতিস্বরূপ তিন রেল কর্মীকে সম্মাননা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর রেলভবনে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে নগদ অর্থসহ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। রেলওয়ে বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান তাদের হাতে এ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

সম্মাননা পাওয়া রেলের কর্মীরা হলেন- সাবেক এল এম গ্রেড-১ মো. সাহাব উদ্দিন, কুমিরা রেলক্রসিং এর গেইটম্যান নাজমুল হোসেন, টি কে গ্রুপের সিকিউরিটি গার্ড মো. দেলোয়ার এবং ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম।

বিজ্ঞাপন

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বছরের গত ১৩ এপ্রিল গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর রেলস্টেশনের কাছে মহুয়া কমিউটার ট্রেনের পাওয়ার কারে অনাকাঙ্খিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে সাবেক লোকোমাস্টার (গ্রেড-১) মো. সাহাব উদ্দিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জ্বলন্ত বগির কাছে গিয়ে পাওয়ার কারের সঙ্গে বগির সংযোগস্থলের হুক খুলে দেন। তার এই অদম্য সাহসিকতা ও কর্মতৎপরতায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির হাত থেকে রক্ষা পায় ওই ট্রেন ও ট্রেনের যাত্রীরা।

এছাড়া গত ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের কুমিরা রেলক্রসিংয়ে দায়িত্ব পালনের সময় ডাউন মালবাহী ট্রেন ৬০৪ আসার আগে নিয়ম মাফিক গেইট বন্ধ করে দেন গেইটম্যান নাজমুল হোসেন। এসময় একটি অটোরিকশায় রোগী আছে দাবি করে কিছু ব্যক্তি গেইট খোলার অনুরোধ জানালে সে দ্রুত গেইট খুলে দিয়ে অটোরিকশা পার করে দেয়। এর দুই বা তিন মিনিট পর ওই ব্যক্তিরা পুনরায় গেইট খোলার অনুরোধ জানায়। ট্রেন ওই গেইটের নিকটবর্তী থাকায় তিনি গেইট খুলতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ব্যক্তিরা গেইটম্যান নাজমুল হোসেন ও সিকিউরিটি গার্ড মো. দেলোয়ারকে নৃশংসভাবে প্রহার করে আহত করে। তারা কর্তব্যনিষ্ঠ থেকে গেইট না খুলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হন।

একইসঙ্গে গত ৪ এপ্রিল ৪ নম্বর ডাউন কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনে ব্রাক্ষণবাড়িয়া স্টেশনে বিপুল সংখ্যক টিকিটবিহীন যাত্রী জোরপূর্বক পাওয়ার কারে প্রবেশের টেষ্টা করে। এসময় ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম ওই পাওয়ার কারের অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ওই যাত্রীদের পাওয়ার কারে উঠতে বাধা দিলে তাদের একটি অংশ তাকে আক্রমণ করে এবং তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন।

এই তিন রেল কর্মী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের একজন সিকিউরিটি গার্ড নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন রেলসেবা নিশ্চিত করতে এবং মারাত্মক দুর্ঘটনার হাত থেকে যাত্রী ও ট্রেনকে রক্ষা করেন। তাদের এই সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে গৌরবময় একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে। রেলওয়ের সেবা ও যাত্রী সুরক্ষায় তাদের এই অসামান্য অবদানের জন্য তাদেরকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে গেল ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহায় যথাসাধ্য নির্বিঘ্ন ও ঝামেলামুক্ত ট্রেনযাত্রা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের সকল কর্মকর্তা বা কর্মচারীর উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ জানান। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসআর

অবদানের স্বীকৃতি রেল কর্মী সাহসিকতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর