রংপুর: রংপুরে এক দোকানি হত্যা মামলায় গ্রেফতার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিক্ষক মাহামুদুল হককে জামিন দিয়েছেন আদালত। রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোছা. মার্জিয়া খাতুন।
এর আগে দুপুরে তার আইনজীবীরা রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মো. সোয়েবুর রহমানের আদালতে জামিন আবেদন করলেও জামিন দেননি। শুনানি শেষে তিনি আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছিলেন।
পরবর্তী সময়ে মাহামুদুল হকের আইনজীবীরা রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের জন্য শরণাপন্ন হলে বিচারক মোছা. মার্জিয়া খাতুন শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন। এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ জুলাই হাজিরার দিন ধার্য রয়েছে।
এদিকে সকাল থেকেই জামিনের আশায় আদালত চত্বরে অবস্থান নেন স্বজন, শিক্ষার্থী, সহকর্মীসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। আবেদন চলাকালীন আদালত চত্বরে জড়ো হয়ে মাহামুদুল হকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তারা।
মাহামুদুল হকের আইনজীবী শামীম আল মামুন বলেন, ‘যে মামলায় শিক্ষক মাহামুদুল হককে আসামি করা হয়েছে বাদী এ বিষয়ে জানেন না। আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের পর যে শিক্ষক সর্বপ্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেফতার জুলাই চেতনার পরিপন্থী।’
মাহামুদুল হকের স্ত্রী মাসুবা হাসান মুন জানান, কারাগার থেকে মুক্তির পর মাহামুদুল হককে বাসায় নেওয়া হয়েছে। তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন। এ সময় স্বজন, শিক্ষার্থী, সহকর্মী, সাংবাদিকসহ শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মুন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে ছমেস উদ্দিন হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হককে রংপুরের বাসা থেকে মহানগর হাজিরহাট থানার পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে তোলেন। আদালত তার জামিন মঞ্জুর না করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তারও আগে গত ৩ জুন রংপুর নগরীর রাধাকৃষ্ণপুর এলাকায় হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া মুদি দোকানদার সমেছ উদ্দিনের স্ত্রী আমেনা বেগম স্বামী হত্যায় হাজিরহাট থানায় ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হককেও। তিনি ওই মামলার ৫৪ নম্বর আসামি।
মাহামুদুল হককে গ্রেফতারের খবর জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এমনকি তাকে গ্রেফতার করায় পুলিশের পেশাদারিত্ব ও ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। বিতর্কের মুখে অবশেষে বদলি করা হয়েছে হাজিরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল আল মামুন শাহকে।