Tuesday 24 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিক্ষা সংস্কারে দায়বদ্ধতার অভাব ও সঠিক পরিকল্পনার ঘাটতি চ্যালেঞ্জ: শিক্ষা উপদেষ্টা

ঢাবি করেস্পন্ডেন্ট
২৪ জুন ২০২৫ ১৫:০২ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ১৭:৪৮

মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘২০২৫-২৬ বাজেট: শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার – ছবি : সারাবাংলা

ঢাবি: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, সময় ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকলেও দায়বদ্ধতার অভাব আর সঠিক পরিকল্পনার ঘাটতি শিক্ষা খাত সংস্কারে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রে যে কাজ করা যেত, তা করা যায়নি এবং এর ফলে হতাশা তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘২০২৫-২৬ বাজেট: শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষা খাতের সংস্কারে নির্দিষ্ট সময়সীমা এবং সুনির্দিষ্ট কার্যপরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শুধুমাত্র কমিশন গঠন এবং আলোচনা করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। তৃণমূল পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা কাজে লাগানো এবং সময়সীমা নির্দিষ্ট করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, শিক্ষক ও প্রশিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি, যা অতি জরুরি ছিল। নারীদের কারিগরি শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যে বৈষম্য বিদ্যমান, তা সমাধান করা যায়নি। সঠিক প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে এবং স্টিগমা কমানো গেলে এ খাত থেকেও ভালো অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা আনা সম্ভব।

এ সময় শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বাংলায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিশ্বসেরা বইগুলোর অনুবাদ করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

বিদেশ থেকে যে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, এর বড় অংশ আগের ঋণ শোধ করতেই খরচ হয়ে যাচ্ছে- এমন মন্তব্য করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বছরের পর বছর আমরা এমন সিসিফাসের মতো পরিস্থিতির মধ্যে আছি। তবে এই চক্রের মধ্যে থেকেও শিক্ষা খাতসহ অগ্রাধিকারের জায়গাগুলোতে যাতে উচ্চ প্রভাব পড়তে না পারে- এমন উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের একাডেমিয়ার সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির একটা দূরত্ব গোছাতে ফ্রেশ গ্রাডুয়েটদের জন্য তিন মাসের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম চালু করা খুবই দরকার। এখন দেশে প্রতিবছর ২০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রয়োজন। সে মাত্রায় বাংলাদেশ ৮ থেকে ১০ লাখ করতে পারে। এভাবে চললে একসময় বাংলাদেশ বৈশ্বিক বাজারে পিছিয়ে পড়বে।

বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে ‘সিস্টেম ব্যয়’ দূর করার জন্য ‘ ইন্টার ইউনিভার্সিটি লোন ফ্যাসিলিটি’ করার গুরুত্বারোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যন্ত্রপাতি না থাকায় ভালো গবেষণা করা যায় না। অনেক শিক্ষার্থী পড়তে পারে না। সেটা দূর করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ইন্টার ইউনিভার্সিটি লোন ফ্যাসিলিটি চালু করলে সিস্টেম কস্ট অনেকটা কমে আসবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার ‘ সময় মত’ হলে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অধ্যাপক তিতুমীর বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় জুলাই মাসে ভর্তিএবং চার বছর পর জুনে শেষ করে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এটা নিয়ে কনসার্ন নেই। আমরা যদি পৃথিবীর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মত করতে পারি তাহলে আমাদের দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান খাতে বর্তমান বাজেটে আয়-ব্যয়ের হিসেব নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবু ইউসুফ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, উপ- উপাচার্য অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/কেকে/আরএস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সেমিনার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর