Tuesday 24 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্টারনেটে আপত্তিকর কন্টেন্টের নিশানায় নারী রাজনীতিকরা: পিআইবি

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুন ২০২৫ ১৬:০৪ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ১৭:৪৭

ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: কয়েক বছর ধরে ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার), ইউটিউব, টিকটকসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নারীদের নিয়ে আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রচার একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি এই প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে, আর সবচেয়ে বেশি টার্গেট হচ্ছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্ট নারী ব্যক্তিত্বরা, বিশেষত সরকারপন্থী নারী নেতারা।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্টের পাঠানো এক অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর আলোচনায় আসা কয়েকজন নারী রাজনীতিককে জড়িয়ে ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ক্রমাগত ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এসব নারীর নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি, তাদের জড়িয়ে গণমাধ্যমের নামে ছড়ানো ভুয়া ফটোকার্ড, ভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ এডিটেড ছবি, আপত্তিকর ডিপফেইক ভিডিও, কুরুচিপূর্ণ বানোয়াট মন্তব্য যুক্ত করে ছবি, ভিডিও তৈরিসহ বিভিন্নভাবে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এসব বিষয় বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে ব্যবহার করা হচ্ছে মূলধারার বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম ও লোগো সংবলিত নকল ফটোকার্ড।

বিজ্ঞাপন

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট দেশের পাঁচজন উদীয়মান নারী রাজনীতিক, একজন প্রতিষ্ঠিত নারী রাজনীতিক এবং একজন নারী উপদেষ্টাকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেটে ছড়ানো ২৭টি আপত্তিকর কন্টেন্ট বিশ্লেষণ করে দেখেছে; যার সব দাবিই ভুয়া।

এসবের বাইরেও উল্লিখিত নারীদের নিয়ে ইন্টারনেটে আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রচার হয়ে থাকতে পারে, যা যাচাইয়ের সীমাবদ্ধতার কারণে উঠে আসেনি। বিভিন্ন সময়ে দেশের অন্যান্য তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানও এসব কন্টেন্টকে ভুয়া হিসেবে শনাক্ত করেছে।

এরমধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ পাঁচটি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ১৮.৫২ শতাংশ।

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানাকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ ছয়টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ২২.২২ শতাংশ।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ পাঁচটি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ১৮.৫২ শতাংশ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুমকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ ৭টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ২৫.৯৩ শতাংশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমাকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ২ টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ৭.৪১ শতাংশ।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীনকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ একটি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ৩.৭০ শতাংশ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেবকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ একটি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ৩.৭০ শতাংশ। এর মধ্যে নুসরাত তাবাসসুমকে নিয়ে ইন্টারনেটে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।

এছাড়াও ২৭টি আপত্তিকর কন্টেন্টের মধ্যে ৩টি (রুমিন ফারহানাকে নিয়ে ছড়ানো) কেবল জুলাই অভ্যুত্থানপূর্ব সময়ের; অন্যদের নিয়ে ছড়ানো বাকি সব কন্টেন্টই জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ের।

এর বাইরেও উল্লিখিত নারীদের নিয়ে রাজনৈতিক, ধর্মীয়-সহ অন্যান্য বিষয় জড়িয়ে ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে। তবে বাংলাফেক্টের এই প্রতিবেদনে শুধু আপত্তিকর কন্টেন্ট বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এসব কন্টেন্টের মধ্যে ১১টি ফটোকার্ডকেন্দ্রিক, ১০টি ভিডিওকেন্দ্রিক, ৫টি ছবিকেন্দ্রিক এবং ১টি কন্টেন্ট অডিওকেন্দ্রিক।

সারাবাংলা/কেকে/ইআ

পিআইবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর