সিলেট: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পৃথক দুটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় পুলিশ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া বিভিন্ন মূল্যবান মালামাল ও চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম।
শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে পৃথকস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার দোহালিয়া গ্রামের মৃত রবই মিয়ার ছেলে রুহেল আহমদ (৩০), মুছেলগুল গ্রামের তাজিম উদ্দিনের ছেলে আবু তায়েব আহমদ সাজু (২৮), বর্ণি নোয়গাও এলাকার রফিক উদ্দিনের ছেলে নুর হোসেন (৪০), কুমারশাইল এলাকার আছার উদ্দিনের ছেলে জাকির হোসেন (৩১), মাধবগুল এলাকার মৃত আহমদ হোসেনের ছেলে শাহ আলী (৪২), মৌলভীবাজার মিরপুর দক্ষিণ এলাকার দরবেশ আলীর ছেলে আলাল মিয়া (৩৮)।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুন রাত ৯টা থেকে ১৩ জুন ভোর ৫টার মধ্যে বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা এলাকার শ্রী শ্রী উদ্ভব ঠাকুরের আখড়ায় চুরির ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত চোরেরা মন্দিরের কড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ১৩ জুন মন্দির কমিটির সভাপতি মঞ্জু লাল দে বড়লেখা থানায় একটি মামলা করেন। এরপর গত ২৬ জুন রাত ১০টা থেকে ২৭ জুন সকাল ৭টার মধ্যে একই উপজেলার দক্ষিণভাগ সার্বজনীন দেবস্থলী মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত চোরেরা মন্দিরের বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শুক্রবার বড়লেখা থানায় মন্দির কমিটির লোকজন থানায় মামলা করেন। দুটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই সুব্রত চন্দ্র দাস, এসআই নিউটন দত্ত, এএসআই মফিজুল ইসলামসহ পুলিশ অভিযানে নামে।
পরে বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গত বুধবার (২৫ জুন) রাত সাড়ে ৮টায় দক্ষিণভাগ বাজারের পাশের রেললাইন এলাকা থেকে প্রথমে রুহেল আহমদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত আবু তায়েব আহমদ সাজু, নুর হোসন, জাকির হোসেন, মো. আলাল মিয়া, শাহ আলীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাধবগুল এলাকার সুহেল মিয়ার মার্কেটে শাহ আলীর ভাঙ্গাড়ী দোকান থেকে চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া নুর হোসনের বসতবাড়ি থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি কাটার, দুইটি হেসকু ব্লেড, একটি হ্যামার, তিনটি স্লাই রেঞ্জ, তিনটি হাতুড়ি, দুইটি রডের টুকরা ও একটি লাল রঙের জগ জব্দ করা হয়।

মন্দির থেকে চুরি হওয়া মালামাল।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে ১১টি পিতলের ঘট (ছোট বড়), দুইটি পুষ্প থালি, একটি পিতলের প্রদীপ, দুই সেট চিপ কোষা, একটি বড় কাসার ঘণ্টা, পাঁচটি কাসার বাটি, ২টি কাসার থালা, একটি পিতলের কলসি, একটি কাসার ঘণ্টা এবং ছয়টি কাসার থালা।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান মোল্লা শনিবার বিকেলে সারাবাংলাকে বলেন, দুটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চুরি যাওয়া বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী ও চুরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।