ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এফএফআইএল) এর বিরুদ্ধে স্টার্লিং ক্রিয়েশনস লিমিটেড-এর ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) বাবদ পাওনা অর্থ ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ তদন্তে নেমেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এ বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কমিশন।
বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, সংস্থার মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অধীনে গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির যুগ্ম পরিচালক সুলতানা পারভীন, সহকারী পরিচালক ফারজানা ইয়াসমিন ও মো. তৌহিদুল ইসলাম সাদ্দাম। গঠিত কমিটিকে ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের কাছে স্টার্লিংয়ের পাওনা এফডিআর পরিশোধের আর্থিক সক্ষমতা ছিল কি না, থাকলে কেন পরিশোধ করা হয়নি- তা খতিয়ে দেখবে কমিটি। পাশাপাশি কোনো সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন হয়েছে কি না, স্টার্লিং আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিল কি না এবং প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট দায়বদ্ধতা ও গভর্নেন্স কোড যথাযথভাবে পালন হয়েছে কি না- তাও বিশ্লেষণ করা হবে।
এছাড়া বিএসইসি পুনর্গঠিত ফারইস্টের পরিচালনা পর্ষদ এই পাওনা পরিশোধে কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না, তাও তদন্তের আওতায় আসবে।
জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যৌথ একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে ফারইস্ট ফাইন্যান্সকে চরম আর্থিক সংকটে থাকা ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এখন ৮২১ কোটি টাকার বেশি দীর্ঘমেয়াদি ঋণে ডুবে আছে। আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে না পারা, উচ্চ খেলাপি ঋণ ও মূলধন ঘাটতির কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে একীভূত করার সুপারিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা যায়, ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটি বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। কোম্পানিটি ২০১৬ সালের পর আর শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণীতে লভ্যাংশের কোনো সুপারিশ আসেনি। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ৪০ লাখ ৬৩ হাজার ৩৩০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে ৩৯.৭৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১২.৫৭ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৭.৬৯ শতাংশ শেয়ার।