ঢাকা: শিক্ষাবিদ, কবি ও লেখক আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্মরণে সেমিনার করেছে বাংলা একাডেমি। রোববার (১৫ই আষাঢ়) বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এ সেমিনার হয়।
এতে স্বাগত বক্তৃতা দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। প্রবন্ধ পাঠ করেন লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আজফার হোসেন। সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘‘আবু হেনা মোস্তফা কামাল বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের বহুল আলোচিত ব্যক্তিত্ব। তাঁর কবিতার সারল্য ও গভীরতা যেমন পাঠককে স্পর্শ করে তেমনি তাঁর গীতিকার-সত্তাও কবি-পরিচয়ের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অল্প তাঁর রচনা কিন্ত, অনন্য। আবু হেনা মোস্তফা কামালের মতো একজন স্মরণীয় শিক্ষক এবং সপ্রতিভ বুদ্ধিজীবীকে অনুধাবন করা আমাদের নাগরিক সংস্কৃতির সঠিক পাঠের জন্য অত্যন্ত জরুরি।’’
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘‘আবু হেনা মোস্তফা কামাল শিক্ষক হিসেবে ছিলেন বন্ধুর মতো, লেখক হিসেবে বহুমাত্রিক। তাঁর কথকতার সুনাম বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রবাহিত। প্রবন্ধ-গবেষণায় তাঁর কাজ খুব বেশি নয় কিন্তু, যথেষ্ট মূল্যবান। বাংলা গদ্য নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে তাঁর প্রাবন্ধিক আগ্রহ ছিল অপরিসীম।’’
তিনি বলেন, ‘‘আবু হেনা মোস্তফা কামাল তাঁর নজরুল বিষয়ক মূল্যায়নে বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ আলী আশরাফ, আহমদ শরীফ কিংবা হুমায়ুন আজাদের মতো বৈরী সমালোচকের মোকাবেলা করেছেন এবং নজরুলকে তাঁর সত্যমূল্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাংলা একাডেমির উচিত আবু হেনা মোস্তফা কামালের নজরুল বিষয়ক সমস্ত রচনার একটি সংকলন প্রকাশ করা।’’
অধ্যাপক আজফার হোসেন বলেন, ‘‘আবু হেনা মোস্তফা কামাল কিংবদন্তিতুল্য শিক্ষক এবং বাগ্মী। তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য লালন করতেন প্রবল ভালোবাসা ও প্রগাঢ় অঙ্গীকার। কবিতাকে তিনি জীবনের ধ্রুবতারা মনে করতেন, কবিতাহীন জীবনকে মৃত আত্মার সঙ্গে তুলনা দিতেন। স্বল্পায়ু সাহিত্যজীবনে তিনি লিখেছেন কম কিন্ত, যা লিখেছেন প্রতিটিতেই তাঁর নিজস্বতা স্পষ্ট। বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেখকদের নিয়ে তাঁর প্রবন্ধগুলো নতুন ভাবনার সঞ্চার করে।’’
অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘‘আবু হেনা মোস্তফা কামাল একজন বর্ণাঢ্য সাহিত্যব্যক্তিত্ব। তিনি শিক্ষাবিদ, কবি, প্রাবন্ধিক-গবেষক এবং বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক। নিজের সাহিত্য ও শিক্ষকতা জীবনে যেমন তিনি অনন্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন তেমনি স্বল্পকালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও তিনি উদ্ভাবনময়তা ও সৃজনশীলতার উদাহরণ রেখে গেছেন।’’
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মাহবুবা রহমান।