রেকর্ড ভাঙা তাপপ্রবাহে ইউরোপজুড়ে তীব্র গরমের কবলে পড়েছে বহু দেশ। ফ্রান্সের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১ জুলাই) দেশটির ১৬টি বিভাগে সর্বোচ্চ ‘লাল সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে, যেখানে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
আরও ৬৮টি বিভাগে ‘কমলা সতর্কতা’ জারি রয়েছে, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্তর। তীব্র গরমে রাজধানী প্যারিসে আইফেল টাওয়ারের শীর্ষভাগ দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাতাসে ওজোনের পরিমাণ বাড়ায় বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে উচ্চ-দূষণকারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা এবং গতি সীমা হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইফেল টাওয়ার কর্তৃপক্ষ সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, ‘সূর্যের তাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন।’ দর্শনার্থীদের জন্য আশেপাশে পানির ফোয়ারাও চালু রাখা হয়েছে।
তাপপ্রবাহের কারণে ফ্রান্সের গলফেক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফরাসি বিদ্যুৎ সঞ্চালন সংস্থা জানায়, ‘গত কয়েক দিনের আবহাওয়ার কারণে গারোন নদীর পানির তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে সোমবার (৩০ জুন) ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’
প্রচণ্ড গরমে ফ্রান্সজুড়ে প্রায় ১ হাজার ৩৫০টি বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা জানান, শ্রেণিকক্ষগুলো অত্যন্ত গরম এবং পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল না থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
বয়স্ক, শিশু ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
শুধু ফ্রান্স নয়, ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন দেশেও গরম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলে জুন মাসের নতুন তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। পর্তুগালের অভ্যন্তরীণ শহরগুলোতেও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছেছে।
সোমবার (৩০ জুন) পর্তুগালের উত্তর উপকূলে বিরল একটি ‘রোল ক্লাউড’ দেখা যায়, যা হঠাৎ করে শক্তিশালী বাতাস ও অন্ধকার আকাশ নিয়ে আসে, বিস্ময়ে ফেলে দেয় সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের।
এদিকে, ইতালির রোম, মিলান, পালারমোসহ ১৮টি শহরে তাপপ্রবাহের জন্য লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।