ঢাকা: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রস্তাবিত ‘টেলিকম নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি ২০২৫’ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। একইসঙ্গে প্রস্তাবিত টেলিকম গাইডলাইনের বিষয়ে সংগঠনটি বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই পর্যবেক্ষণ ও উদ্বেগ জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।
বিবৃতিতে তিনি জানান, টেলিকম গাইডলাইন নিয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের পর্যবেক্ষণ ও উদ্বেগসমূহ হলো-
-একচেটিয়া লাইসেন্সিং কাঠামো: প্রস্তাবিত মাল্টি সার্ভিস লাইসেন্স মডেল বড় কোম্পানিগুলোর জন্য সুবিধাজনক হলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি অপারেটরদের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে।
-গ্রামীণ অন্তর্ভুক্তির অভাব: খসড়ায় গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কানেক্টিভিটির জন্য পর্যাপ্ত দিকনির্দেশনা নেই।
-অংশগ্রহণের ঘাটতি: খসড়া তৈরিতে পর্যাপ্ত স্টেকহোল্ডার পরামর্শ ও জনমত গ্রহণের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
-উদ্ভাবন ও স্টার্টআপ-বান্ধব নীতির অভাব: তরুণ উদ্যোক্তা, নারী এবং স্থানীয় উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার দিক অনুপস্থিত।
বিবৃতিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে কিছু প্রস্তাবনা দিয়ে সভাপতি বলেন, ‘আমরা নিম্নলিখিত সুপারিশসমূহ বিনীতভাবে তুলে ধরছি।’
-সংশোধিত লাইসেন্স কাঠামো প্রণয়ন: টায়ারর্ড লাইন্সেসিং সিস্টেম চালু করে বড় ও ছোট প্রতিষ্ঠানের জন্য ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা গঠন স্টার্টআপ লাইসেন্স বা ইনোভেশন ফ্রেমওয়ার্ক যুক্ত করা।
-গ্রামীণ সম্প্রসারণ বাধ্যতামূলক করা: ইনিভার্সেল সার্ভিস ফান্ড (ইউএসএফ) ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা।
-স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন পুনরায় আহ্বান: অন্তত ৬০ দিনের নতুন মতামত গ্রহণ ও উন্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন।
-স্বাধীন মূল্যায়ন রিপোর্ট যুক্ত করা: অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ ছাড়া চূড়ান্তকরণ না করা।
-নীতিমালার বাস্তবায়ন পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন: সুশীল সমাজ, প্রযুক্তিবিদ, এবং গ্রাহক প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা।
বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, একটি অংশগ্রহণমূলক, ন্যায্য ও আধুনিক টেলিকম নীতিমালা কেবল ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করবে না বরং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’