ঢাকা: স্থানীয় পর্যায়ে তৈরিকৃত ফ্রিজ ও এসির খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে শঙ্কায় পড়েছেন দেশীয় ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন শিল্পের বিনিয়োগকারীরা। সরকারের নতুন এই শুল্ক নীতি দেশীয় ফ্রিজ ও এসি শিল্পখাতকে অস্তিত্ব সংকটে ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন প্রেক্ষিতে দেশীয় এই শিল্প রক্ষায় জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, গেল ২৪ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক জারি করা এক সংশোধনী এস.আর.ও নং-২৭৪-আইন/২০২৫/৩১৭-মুসক অনুযায়ী দেশীয় ফ্রিজ ও এসি উৎপাদন শিল্পে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসবের মধ্যে বেশ কিছু খুচরা যন্ত্রাংশ রয়েছে যেগুলো স্থানীয় ফ্রিজ ও এসি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দেশেই তৈরি করছে। সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করায় ওইসব খুচরা যন্ত্রাংশ এখন অল্প খরচে দেশে আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে, যা দেশীয় প্রস্তুতকারীদের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছোট বড় রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও এয়ার কন্ডিশনার কারখানায় কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। এসব কারখানায় কাজ করছেন দক্ষ হাজারো শ্রমিক। ওয়ালটন, মিনিস্টার, যমুনা ইলেকট্রনিক্সসহ একাধিক দেশীয় প্রতিষ্ঠান এখন পুরোপুরি স্থানীয়ভাবে ফ্রিজ ও এসি তৈরি করে। রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও এসির খুচরা যন্ত্রাংশের সবই দেশে তৈরি হচ্ছে বহু বছর ধরে। নিজস্ব কারখানা গড়ে তুলে ফ্রিজ, এসি উৎপাদন ও রফতানিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে এই খাত স্বনির্ভরতা অর্জনের পথে অনেকদূর এগিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিল্প উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে স্থানীয় উৎপাদন অবকাঠামো গড়ে তুলেছি। হঠাৎ করে শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে তা বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরুৎসাহজনক বার্তা দেয়। এতে দেশে শিল্পায়নের গতিও ব্যাহত হবে।’
এ অবস্থায় দেশীয় শিল্প রক্ষায় জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। তারা অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে শিল্পবান্ধব ও টেকসই নীতি গ্রহণ করা হয়। না হলে একটি সফল দেশীয় শিল্প খাত ধ্বংসের মুখে পড়বে, যা দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।